হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস আজ খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
এদিন সকাল সাড়ে আটটায় বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রে অবস্থিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে ১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কেএমপির পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং অংঙ্গসংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জুম এ্যাপের মাধ্যমে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। জুম এ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কেএমপির পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবিরসহ সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা। পরে শিশু একাডেমির চিত্রাংকন ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ঋণ বিতরণ করা হয়। এছাড়া ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সকল সরকারি, বেসরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিবসের সাথে সংগতিপূর্ণ আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, হামদ ও নাত প্রতিযোগিতা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
কেসিসি’র উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা, বৃক্ষরোপণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। সকালে মেয়র নগর ভবন চত্ত্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাদ জোহর কালেক্টরেট জামে মসজিদ, পুলিশ লাইন জামে মসজিদ, টাউন জামে মসজিদসহ নগরীর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গ্রোথসেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শোক দিবসের পোস্টার স্থাপন এবং এলইডি বোর্ডের মাধ্যমে জাতীয় শোক বিষয়ক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে দুই হাজার ৭৫ সংখ্যক বার পবিত্র কোরআন শরীফ খতম এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের উদ্যোগে স্কুল হেলথ ক্লিনিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে। জেলা নির্বাচন অফিস জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বেতার খুলনা কেন্দ্রে অবস্থিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোরআন তেলাওয়াত, হামদ-নাত, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। দিবসটি উপলক্ষে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও সমাজসেবা অধিদপ্তর তাদের অধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সরকারি শিশু পরিবারসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোরআন তেলাওয়াত, আলোচনা সভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, হামদ-নাত ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় শোক দিবসে স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা বা ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ বেতার খুলনা বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে।
খুলনার উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ কর্মসুচি পালিত হয়।