বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনকালে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনায় এস আই বিশ্বজিৎ কুমার বসু বাদী হয়ে ৯২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০০জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারনামীয় আসামীদের মধ্যে ৪১জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ শুক্রবার (২৭ মে) জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া এজাহার নামীয়দের মধ্যে বিএনপি নেতা আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুলসহ অন্যদের পলাতক দেখানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ২০ টুকরা ইটের টুকরা, ১২টি কাঠের আছাড়ি ও ৫টি লোহার রড জব্দ দেখানো হয়েছে।
এজাহারভুক্তরা হলেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন (৫৫), রূপসার জোয়ার এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে মোঃ রনি শেখ (২৬), দিঘলিয়ার উত্তর চন্দ্র্রনীমহলের মোঃ আলতাফ হোসেনের ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমান (৩৯), দিঘলিয়ার পানিগাতির গ্রামের মৃত আব্দুল রউফের ছেলে মোঃ মালেক খা (২৯), নগরীর ডাকবাংলো এলাকার কায়েম উদ্দিনের ছেলে মোঃ আবু জাফর (৬২), বটিয়াঘাটার আমীরপুরের মৃত আব্দুল ওহাব মোল্লার ছেলে মোঃ আসাদ মোল্লা (৫৮), দৌলতপুরের দেয়ানার শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে শেখ খালিদ বিন ওয়ালিদ শোভন (২৬), বটিয়াঘাটার বড়কড়িয়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম (৪৮), যশোরের কেশবপুরের ভেরচি গ্রামের শেখ আলী মোস্তফার ছেলে শেখ মোঃ রুবেল হোসেন (৩৫), ডুমুরিয়া হুলাডাঙ্গা গ্রামের সাজ্জাত শেখের ছেলে মেঃ তিতাস শেখ (৩২), ডুমুরিয়ার থুকড়া গ্রামের মৃত জনাব আলীর ছেলে উপজেলা বিএনপির সদস্য্য সচিব শেখ সরোয়ার হোসেন (৫৩), পাইকগাছার নোয়াকাটি গ্রামের শফিকুল ফকিরের ছেলে মোঃ রেজাউল ইসলাম (২২), ডুমুরিয়া রুদাঘরা গ্রামের মোজাহার আলী সরদারের ছেলে আলী আজগর সরদার (২৭), খালিশপুর লাল হাসপাতাল এলাকার মৃত রফিউদ্দিন মোল্লার ছেলে মোঃ উজ্জল মোল্লা (৩০), ফুলতলার খানজাহানপুর গ্রামের আজিজ বিশ^াসের ছেলে ইমরান বিশ্বাস (২২), বেজেরডাঙ্গা এলাকার আলী হাফিজ মোল্লার ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম (৫২), দিঘলিয়ার ফরমেজ খামার এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে রহিউল ইসলাম (৩৮), ডুমুরিয়ার চুনগরের মৃত নাজিম সরদারের ছেলে নয়ন সরদার (২০), বটিয়াঘাটার আমিরপুর এলাকার আব্দুর রহমান আকুঞ্জির ছেলে মোঃ বোরহান আলী আকুঞ্জি (৩৬), চুকনগরের রুস্তুম এলাকার মৃত হাশেম আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), খালিশপুরের ৮০নং এনআই হাউজিং স্টেটের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আবু সালেহ শিমুল (২৫), লবনচরা বান্দা বাজারের শাহ আলীর ছেলে মোঃ দুলাল (২৫), ডুমুরিয়ার রানাই গ্রামের মোঃ এবাদ আলী ফকিরের ছেলে মোঃ লিটন ফকির (৩৪), নগরীর ছোট বয়রা এলাকার আমীর মীরের ছেলে সুমন মীর (৪৩), রূপসার আইচগাতীর মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মোল্লা তরিকুল ইসলাম (২০), নগরীর ২০ বকশীপাড়া লেনের রফিকুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাত হোসেন জিতু (৩০), ৬৬নং পশ্চিম বানিয়াখামার মেইন রোডের আর বিশ^াসের ছেলে নুর আলম নুরু (৪৮), লবনচরা আমতলা এলাকার মোবারক খানের ছেলে মোঃ সোবহান খান (৪০), বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের আমুরবুনিয়া শুলিশাখালী এলাকার বারেক শিকদারের ছেলে মোঃ কদর শিকদার (২০), নগরীর হাজীবাড়ীর আরিফুর হকের স্ত্রী কাওসারী জাহান মঞ্জু (৪৮), খালিশপুরের শারমিন আক্তার (২৮), সোনাডাঙ্গার মরিয়ম খাতুন মুন্নি (৪০), খালিশপুরের ইভা জামান, বয়রা রায়েরমহলের সোহেলের স্ত্রী মনি (৪০), দৌলতপুরের রুকাইয়া দোলা (২৫), সোনাডাঙ্গার রুবিনা (৩২), আড়ংঘাটার কাজলী (৩৭), বৈকালী এলাকার মৃত মোশারফ হোসেনের স্ত্রী সাবেক কাউন্সিলর আনজিরা খাতুন (৬৯), খালিশপুরের পাপিয়া আক্তার পারুল (৫৩), খালিশপুর চরের আফরোজা জামান (৫২), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক সৈয়দা রেহেনা আক্তার (৭৩)।
এছাড়া এজাহার নামীয়দের মধ্যে পলাতক রয়েছে, নগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. শফিকুল আলম মনা (৬৫), খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল (৫৫), জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান (৫৩), নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির (৫৫), নগর যুবদলের সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু (৪৫), নগর ছাত্রদলের আহবায়ক মোঃ ইসতিয়াক আহম্মেদ ইস্তি (২৮), জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোত্তফা তুহিন (৩২), নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোঃ তাজিম বিশ্বাস (২৮), জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রী (৩২), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ মাসুদ পারভেজ বাবু (৩৫), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আহম্মেদ সুমন (৩৮), নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি একরামুল হক হেলাল (৪৪), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আজিজুল হাসান দুলু (৫৭), রূপসার নূরুল ইসলামের ছেলে মোঃ রাজু আহম্মেদ (২৮), মিয়াপাড়ার আবুল মোমিন বেনু খানের ছেলে মোঃ মাসুদ খান বাদল ওরফে বোমারু হাল (৪৭), নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর (৪২), জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েত (৩৬), ২৫নং রূপসা স্ট্যান্ড রোডের মোঃ মতিউর রহমান বুলেট (৪৫), জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পি (৫৪), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ (৪৫), হাজী মহসিন রোডের আশিকুর রহমান অনি (৩২), ইসলামিয়া মসজিদ রোডের কিমিয়া সাদাত (৩৪), সোনাডাঙ্গা খা বাড়ী মোড়ের মাহমুদ নিবিড় (২০), রূপসার রামনগর এলাকারমৃত রাফি মোল্লার ছেলে রিয়াজ মোল্লা (৩৬), আলীর ক্লাবের মোড়ের মাসকুর হাসান ফ্রান্স (৩৮), রূপসা রামনগর এলাকার আব্দুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান (৩২), ডুমুরিয়া চুকনগরের নজরুল ইসলাম গাজীর ছেলে মোঃ অনিক আহম্মেদ (২৮), চারাবাটি বিমান অফিস এলাকার রবিউল ইসলাম রবি (৩৮), টুটপাড়ার তৌহিদুর রহমান তৌহিদ (৪৫), রূপসা স্ট্যান্ড রোডের মোঃ শাওন (৪০), রূপসার সেনেরবাজার আইচগাতির আলকাস মোল্যার ছেলে মোঃ জাহিদ মোল্যা (৪৫), মন্টু মোল্য্যার ছেলে বাচ্চু মোল্যা (৩৫), স্টেশন রোডের বাসিন্দা শ্রমিকদল নেতা মোঃ শফিকুল ইসলাম শফি (৪৫), নতুন বাজার বাশঁপট্টির মফিজুল সরদার মাফিজুল (৪৫), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শেখ সাদী (৩৮), জেলা বিএনপির জাফরিন নেওয়াজ চন্দন (৪৭), মুন্সিপাড়ার হেলাল হোসেন গাজী (৩৩), বেলাল হোসেন গাজী (৩০), রেলওয়ে হাসপাতাল রোডের মোঃ ফরিদ মোল্যা (৪৮), নগর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবুর রহমান (৫৫), সোনাডাঙ্গার মোঃ ফারুক হোসেন (৪৮), দৌলতপুরের নাইম (৪০), ৫নং মাছঘাটের গাউসুল গাউস (৪৫), রূপসার রাজাপুরের সোহেল (৩৫), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক কাজী মাহামুদ আলী (৫৫), ৪৩নং বয়রা মার্কেট রোডের মোঃ সজ্জাদ আহসান পরাগ (৪৩), মিনারা মসজিদ রোডের একরামুল কবির মিল্টন (৫৩), বসুপাড়ার ডালিম গাজী (৩৫), পশ্চিমবানিয়াখামারের মনিরুল ইসলাম (৫৩), নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়খ স ম আবদুর রহমান (৫৫), শফিকুল ইসলাম টিপু (৪৫)সহ অজ্ঞাত ৭০০ থেকে ৮০০জন। আসামীদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড এর ১৪৩/১৪৭/১৪৯/১৫২/১৫৩/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অপরদিকে আজ সকালে কেডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয় ।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করেছেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ পুলিশের সহায়তায় আমাদের সমাবেশের ওপর আক্রমণ চালায়। পুালিশ টিয়ারসেল ও গুলি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তিনি আজ শুক্রবার (২৭ মে) সকালে দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আগেরদিন সংঘর্ষ হামলা ভাংচুর ও সমাবেশ পন্ড হওয়া নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন।
সেখানে তিনি বলেন, কেএমপি দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে সমাবেশ শুরু করা হয়। সরকার শেষ মুহুর্তে এসে অসহিষ্ণু আচরণ করছে। আমাদের ওপর বিভিন্ন দমননীতি চালাচ্ছে। এমনকি এ ঘটনায় যারা আহত হয়েছে তাদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে আটক করা হচ্ছে। গতকালের ঘটনায় ৫০০ চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। ৪১ জন নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের নামে মামলা করেছে পুলিশ। আদালত খুললে তারা আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীসহ নেতৃবৃন্দ।