চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ জমি দখলকে কেন্দ্র করে খুলনায় এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে লামিয়া আক্তার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট নং-১১৬১) মোঃ আব্দুল কাদের আকন মহানগর সংশ্লিষ্ট লবনচরা এলাকায় বসবাস করেন। একই এলাকার জনৈক নজরুল ইসলামের নিকট থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ২ কাঠা জমি ক্রয় করেন। তবে ওই জমি তিনি এখনও লিখে না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। এ ঘটনায় গত ১১জুলাই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী হেলেনা বেগম খুলনার আদালতে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিআর মামলা করেন (নং-সি/১৮২)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নজরুল ইসলাম খুলনার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে গত সোমবার সন্ধ্যায় তার বাড়িতে অভিযানের নামে তান্ডব চালায়। সে সময় বাড়িতে শুধু আব্দুল কাদেরের স্ত্রী হেলেনা বেগম ও দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে লামিয়া আক্তার উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, তল্লাশির নামে তাদের ঘর থেকে ইয়াবা উদ্ধারের নাটক সাজায়।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে স্কুল ছাত্রী লামিয়া বলেন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হাওলাদার সিরাজুল ইসলামসহ ৫/৬জন আমাদের ঘরে ঢুকে নানাভাবে হেনস্তা করে। ঘরে তল্লাশীর নামে অরাজকতা সৃষ্টির একপর্যায়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের একজন লোক তার হাতে থাকা ছোট একটি পোটলা আমাদের জানালার কাছে রাখার চেষ্টা করলে আমি তা দেখে ফেলি। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমাকে ধমকানো হয়। এরপর আমার মা হেলেনা বেগমকে নিয়ে তারা চলে যায়। পরবর্তিতে জানতে পারি আমার মায়ের নামে লবনচরা থানায় ৫পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক আইনে মামলা দিয়েছেন তারা। এছাড়াও গত ২দিন ধরে আমাদের বাড়িতে অজ্ঞাত যুবকরা এসে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। জমি ছেড়ে না গেলে আমি ও আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকেও মাদক দিয়ে ফাঁসানো হবে বলে তারা হুমকি দিয়েছে। এছাড়া আমাকে এসিড মেরে ঝলসে দেয়াসহ ধরে নিয়ে সম্ভ্রমহানী করার হুমকিও দিচ্ছেন ওই অজ্ঞাত যুবকরা। নিরাপত্তাহীনতায় সে স্কুলেও যেতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন।
তবে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বিকার করেছেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান। তিনি বলেন, ওই নারীর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে যার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নগর শাখার কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, আব্দুল কাদের আকনের পরিবার মাদক ব্যবসার সাথে কখনই জড়িত থাকতে পারে না। এটা পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।