বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা জনগণকে জানানো এবং অবিলম্বে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী রোডমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) খুলনা বিভাগে রোডমার্চ করবে বিএনপি। রোডমার্চ কর্মসূচি সফল করতে ইতিমধ্যে বিভাগীয় সমন্বয় সভাসহ বিভাগের ১০জেলায় ও মহানগরে প্রস্তুতি সভা করেছে বিএনপি। রোডমার্চ ঘিরে জনমানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। খুলনা বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। বিভাগের ঝিনাইদহ জেলা থেকে রোর্ডমার্চ শুরু হয়ে মাগুরা-যশোর-নওয়াপাড়া-ফুলতলা হয়ে খুলনার শিববাড়ি জিয়া চত্ত্বরে ৫ লক্ষাধিক লোকের জন সমাবেশ ঘটাবে বলে দলটি জানিয়েছে।
সমাবেশে ব্যাপক জনতার উপস্থিতির মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করবে খুলনা বিভাগ। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মীর্জা আব্বাস, বিশেষ অতিথি থাকবেন বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম।
সমাবেশে সভাপতিত্বে করবেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শািফকুল আলম মনা। পরিচালনা করবেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি।
পথসভা হবে ১০টি:
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঝিনাইদহ থেকে রোডমার্চ কর্মসুচির উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন শেষে মাগুরা-যশোর-নওয়াপাড়া-ফুলতলা হয়ে খুলনার শিববাড়ি জিয়া চত্ত্বরে মুল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তবে ঝিনাইদহ থেকে খুলনা পর্যন্ত ১০টি পথসভায় বক্তব্য দিবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
খুলনায় ব্যাপক প্রস্তুতি:
রোডমার্চ শেষে খুলনার সমাবেশ সফল করতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল বিশাল তোরণ। পোস্টার প্যানা সাটানো ও প্রচার পত্র বিলি করা হয়েছে। রবিবার থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে খুলনা নগরীতে। দলীয় সুত্র জানিয়েছে, রোডমার্চ সফল করতে এবং বর্তমান আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা পোষণ করতে সর্বশ্রেণীর ব্যক্তিবর্গকে উজ্জীবিত করতে সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে ১০লাখ লিফলেট পৌছে দেয়া হয়েছে।
বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মিলটন বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের সকল স্বাধীনতাকে হরণ করেছে। আওয়ামী অপশাসনে দেশের জনগণ আজ আর ভালো নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দফায় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশের মানুষ এ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। দেশের জনগণের সাথে একাত্মতা পোষণ করে অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশ ও দেশের জনগণকে বাঁচাতে বিএনপি রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, ইতিপুর্বে খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ ও তারুণ্যের সমাবেশে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি প্রমান করেছে অবৈধ সরকারের সাথে দেশের মানুষ নেই। আজকের সমাবেশে ৫ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে বলে তিনি জানান।
সরকার পতনের একদফা দাবিতে খুলনা বিভাগীয় রোডমার্চকে ঘিরে চাঙ্গা বিএনপি’র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ঝিনাইদহ থেকে শুরু হয়ে ১৬০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে খুলনা নগরীর জিয়া হলের সামনে সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। রোডমার্চকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে নগরীর প্রবেশ দ্বারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ মোড়ে ২ শতাধিক তোরণ, নগরীর যশোর রোড, কেডিএ এভিনিউ, মজিদ স্মরণীসহ দলীয় কার্যালয়ে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
রোডমার্চ সম্পর্কে মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বরের রোডমার্চ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। অতীতের বিভাগীয় মহাসমাবেশ, তারুণ্যের সমাবেশের চেয়ে জনসমাগম বেশি হবে। বিএনপির আন্দোলনে সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার চুরি করেছে। জনগণ এবার আর ভোট চুরি করতে দেবে না।
বিএনপি খুলনা বিভাগীয় সমন্বয় সভা:
একদফা দাবী আদায়ে খুলনা বিভাগীয় রোড মার্চ সফলের লক্ষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনা জেলা আইনজীবী মিলনায়তনে বিএনপি বিভাগীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম।
বিএনপির প্রেস ব্রিফিং:
খুলনা বিভাগীয় রোড মার্চ-এর সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় প্রেস ব্রিফিং করছে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি। কে ডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিং এ বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলার সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু।
কেসিসি ও কেএমপির অনুমোদন:
খুলনা বিভাগীয় রোডমার্চ শেষে জিয়াহল চত্ত্বরে (শিববাড়ি মোড়) ১০শর্তে সমাবেশের অনুমোতি দিয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কেসিসির এষ্টেট অফিসার স্বাক্ষরিত অনুমতি পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। এরছাড়া সোমবার মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মৌখিত অনুমোতি দিয়েছে। অস্থায়ী মঞ্চ ও সাউন্ড: রোডমার্চ শেষে খুলনা নগরীর শিববাড়ি জিয়া চত্ত্বরে ৬টি ট্রাকে নির্মিত হবে অস্থায়ী মঞ্চ। গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য আলাদা মঞ্চ থাকবে। এছাড়া ১৬০টি মাইক থাকবে সমাবেশস্থলে। সমাবেশ স্থলের জন্য আলাদা ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে। ১৫টি উপ-কমিটি গঠন: রোড মার্চ কর্মসুচি সফল করতে ১৫টি উপ কমিটি গঠন করেছে খুলনা বিএনপি।
অর্থ উপ-কমিটি:
আজিজুল বারী হেলাল, এড শফিকুল আলম মনা, আমীর এজাজ খান, শফিকুল আলম তুহিন, মনিরুল হাসান বাপ্পি।
সাংগঠনিক উপ-কমিটি:
আবুল কালাম জিয়া, চৌধুরি শফিকুল ইসলাম হোসেন, মহানগর বিএনপির সকল সদস্যবৃন্দ, থানা কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিববৃন্দ। অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, আহবায়ক/সদস্য সচিব বৃন্দ। মঞ্চ নির্মাণ উপ-কমিটি: কাজী মাহমুদ আলী, মোল্লা খায়রুল ইসলাম।
মিডিয়া উপ-কমিটি:
মিজানুর রহমান মিলটন, আশরাফুল ইসলাম নুর, সোহরাব হোসেন, রকিবুল ইসলাম মতি। শৃঙ্খলা উপ-কমিটি: তৈয়েবুর রহমান, একরামুল হক হেলাল, মজিবর রহমান, উজ্জল কুমার সাহা, কাজী নেহিবুল হাসান নেহিম, আব্দুল্লাহ হেল কাফি সখা, ফারুক হিল্টন, আতাউর রহমান রনু, মান্নান মিস্ত্রি, শফিকুল ইসলাম শফি, গোলাম মোস্তফা তুহিন, তাজিম বিশ্বাস, মোল্লা কবির হোসেন, আক্তারুজ্জামান তালুকদার সজীব, শেখ আবু সাইদ, শেখ আদনান ইসলাম দ্বীপ। সাংস্কৃতিক উপ-কমিটি ঃ নুর ইসলাম বাচ্চু, শহিদুল ইসলাম, এহতেশামুল হক শাওন, আজাদ আমিন।
প্রচার উপ-কমিটি ;
শেখ সাদী ও হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ।
আবাসন উপ-কমিটি :
শের আলম সান্টু, আশরাফুল আলম নান্নু। আপ্যায়ন উপ কমিটি: বদরুল আনাম খান।
চিকিৎসা উপ-কমিটি:
ড্যাব নেতৃবৃন্দ।
আইনি সহায়তা উপ-কমিটি :
এড. মোমরেজুল ইসলাম, এড. তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষার।
সাজসজ্জা উপ-কমিটি :
স্ব স্ব থানার নেতৃবৃন্দ।
অভ্যার্থনা উপ-কমিটি:
স ম আব্দুর রহমান ও বেগম রেহানা ঈসা, এড. নুরুল হাসান রুবা, এড. মোল্লা মাসুম রশীদ। এছাড়া যোগাযোগ উপ-কমিটি ও মঞ্চ ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।