বি হোসেন সজলঃখুলনায় হঠাৎ করে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে সরকারি বেসরকারি মিলে ১০ রোগী সনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৬ জন খুলনা মেডিকেল এ বাকিরা খুলনার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আইসিউতে রয়েছে দুইজন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১০ জন। শুধুমাত্র খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগের সপ্তাহে সনাক্ত হয়েছে আরও ১০ জন। চলতি বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গু জ্বর দেখা দিলেও গত জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে এই সংখ্যা ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বাসায় থাকা নারী ও কিশোরীর সংখ্যাও রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ১ নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ এর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও একজন। এছাড়া গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও ৩০২ নম্বর কেবিনে রয়েছে আরও একজন ডেঙ্গু রোগী। প্রতিদিন হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত বহু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে এখন রয়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। ডেঙ্গু বাহক এডিশ মশার প্রজনন বেশি হওয়ার কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানান, এই মৌসুমে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। এই মৌসুমে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ এবং স্থির পানিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিশ মশার প্রজনন ঘটে। তারা বলেন ঠিকমতো মশার ওষুধ না দেয়ায় প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। অনেক জ্বরে আক্রান্ত রোগী আসছে। জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু বাড়ে। এরপর শীত এলে কমে যাবে।
ডেঙ্গু জ্বর লক্ষণ ও প্রতিরোধ নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মেডিসিন এর বিভাগীয় প্রধান ডাঃ এস এম কামাল বলেন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জ্বরের তাপমাত্রা হয় অনেক বেশি, গড়াতে পারে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। তবে, তরুণ এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরও উপসর্গ দেখা যায় খুবই সামান্য কিংবা একেবারেই উপসর্গহীন।
বিরামহীন মাথাব্যথা, হাড়, হাড়ের জোড় ও পেশিতে ব্যথা, বমিভাব ও বমি হওয়া, গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, সারা শরীরের ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া, চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া, ইত্যাদি। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পরিমাণে তরল গ্রহণ করার মাধ্যমে দ্রুত রোগমুক্ত হওয়া যায়। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই ডেঙ্গু সচরাচর সেরে যায়। এই অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
প্রতিরোধ: ডেঙ্গু ভাইরাসবাহী এডিস মশা দিনের বেলায় সক্রিয় থাকে বেশি। তাই দিনের বেলা মশা যাতে না কামড়ায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই মশা পরিষ্কার পানিতে ডিম পারে। তাই মশার বংশ বিস্তার রোধে খোলা পাত্রে পানি যাতে না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।