ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সকল উন্নয়ন ও অগ্রগতির কর্ণধার শ্রমজিবী মানুষকে বঞ্চিত করে দেশের কাংখিত উন্নয়ন কখনোই সম্ভব হবেনা। শ্রমিকদের ঘামকে পূজি করে এক শ্রেণীর মানুষ রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে বটগাছে পরিনত হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক দিবস পালিত হয়। কিন্তু ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন না থাকায় শ্রমজীবি মানুষ আজও অধিকার বঞ্চিত।
বুধবার (১ মে) বিকাল ৪ ঘটিকায় পাওয়ার হাউস মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর শাখা আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ও র্যলী পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলে। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদ এবং নগর সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম খান এর সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ, সহ- সভাপতি শেখ মো: নাসির উদ্দিন, সেক্রেটারী মুফতি ইমরান হুসাইন, মোঃ আবু গালিব, আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন, মোঃ রেজাউল করিম, ছাত্র নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাহদী হাসান মুন্না, হাবিবুল্লাহ মিসবাহ, যুব নেতা ইমরান হোসেন মিয়া, আব্দুস সবুর, শ্রমিক নেতা আল আমিন, আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, মো: দেলোয়ার, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, পলাশ শিকদার, শাহিন, মকবুল, ফজলুর রহমান, আশরাফুল আলম, মাও: রশিদ আহম্মদ, মাও: খলিলুর রহমান, রেজাউর করিম রনি, গাজী আল আমিন, শাখাওয়াত, আ: মান্নান সরদার, আফজাল, আনিছুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, ডা: আয়নাল, আলহাজ্ব কাওছার, ফারুক, শিমুল ব্যাপারী, ওহিদ ফকির প্রমুখ।
বক্তব্যে এইচ এম সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি আদর্শের আলোকে দেশ পরিচালিত না হওয়ায় রাজনৈতিক নিপিড়ন থামছে না। বিনা ভোটের বর্তমান সরকারের কাছ থেকে কোন দাবী আদায় সম্ভব নয়। এ জন্য সর্বত্র আল্লাহ ভিরু নেতা নির্বাচিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন ইসলামের নিতী আদর্শ অনুযায়ী দেশ পরিচালিত না হওয়ায় এখন দুর্নিতী অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে। সর্বোত্ত দুর্ণিতী, সন্ত্রাস ও মাদকের ছড়াছড়ি। এমতাবস্থায় একটি উন্নত কল্যান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশের শান্তি, মানবতার মুক্তি সম্ভব নয়। বিশেষ অতিথি মুফতী আমানুল্লাহ বলেন- ইসলামী শ্রমনিতী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। শ্রমিকরা তাদের শ্রমের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বোগতির বাজারে শ্রমিকদের যে পারিশ্রমিক দেয়া হয় তাতে সংসার চলেনা। তিনি বলেন দেশের ক্ষমতা ও রাজনৈতিক অধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই দ্রশ্যমান। যার বলি হচ্ছে সাধারণ শ্রমিকরা। এজন্য পীর সাহেব চরমোনাইর নেতৃত্রে ইসলামী শ্রমনিতী প্রতিষ্ঠা সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তার আলোচনায় বলেন, শিল্প নগরী খুলনা আজ মৃত নগরীতে পরিনত হয়েছে। মিল কলকারখানা আজ প্রাই সব বন্ধ। শ্রমিকগন হলেন দেশের চালিকা শক্তি। অথচ রাষ্ট্রের সেই চালিকা শক্তি শ্রমজিবী মানুষ আজ নির্যাতিত, নিপিড়িত, শোষিত, বঞ্চিত ও পদদলিত। শ্রমজিবী মানুষরাই আজ জুলুমের শিকার।
নগর সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম খান তার আলোচনায় ১০ দফা দাবী পেশ করেন।
১০ দফা দাবী: ১) ফরিদপুর মধুখালী ২ শ্রমিক হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবী করছি।
২) প্রত্যেক শ্রমিকদের নুন্যতম মাসিক মজুরী হিসেবে ২৫,০০০/- টাকা দাবী করছি।
৩) দুর্ঘটনায় আহত ও মৃত শ্রমিকদের ক্ষতি পূরন দিতে হবে।
৪) শ্রমিকদের ফ্রি চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা করতে হবে।
৫) শ্রমিকদের রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৬) শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী পরিশোধ করতে হবে।
৭) ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও ভ্যান মানবিক কারনে চলাচলের অনুমতি দিতে হবে।
৮) বন্ধ মিল কলকারখানা অবিলম্বে চালু করতে হবে।
৯) শ্রমিকদকের সন্তানদের ফ্রি লেখা পড়া করার সু-ব্যবস্থা করতে হবে।
১০) প্রশাসন কর্তৃক রাস্তার মোড়ে মোড়ে যানবাহন হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
সমাবেশ শেষে বিশাল এক র্যালি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।