অনুমোদনের দীর্ঘসূত্রিতা কাটিয়ে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পরিবেশক নিয়োগও দেয়া হয়েছে কিছু। তবে বাজারে কবে আসছে খুলনা ওয়াসার বোতলজাত ড্রিঙ্কিং ওয়াটার ‘সুন্দরবন পানি’? এর উত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছেও। প্রকল্প পরিচালকের অযুহাত, করোনার কারণে আপাতত বাজারজাতকরণ করছেন না তারা। অথচ, প্রকল্পটি মুজিববর্ষে বাজারে ছাড়ার কথা ছিল।
খুলনা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ‘সুন্দরবন পানি’ নামে বোতল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। এজন্য নগরীর জলিল সরণির রায়েরমহল এলাকায় ১৫ দশমিক ৩৭ কাঠা জমিতে প্রায় ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় বোতল তৈরির কারখানা ও পানি পরিশোধন কেন্দ্র। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এসব নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল। এরপর বাজারজাত করতে গেলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বিএসটিআই। প্রায় এক বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর বিএসটিআই এই পানি বাজারজাত করার অনুমোদন দিয়েছে। এরপর পরিবেশক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালেই শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯।
জানা গেছে, এই কেন্দ্রে প্রতি ঘণ্টায় ৮ হাজার লিটার পানি উৎপাদন হবে। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে ৬৪ হাজার লিটার পানি উৎপাদন হবে। বিভিন্ন অপচয়ের পর এর মধ্যে ৬ হাজার ৪৫০ লিটার পানি বোতলজাত করা হবে। ৩০০ মি.লি, ৫০০ মি.লি, এক লিটার, দুই লিটার, তিন লিটার, পাঁচ লিটার বোতল এবং ২০ লিটার জারে করে পানি বাজারজাত করবে ওয়াসা। প্রতিদিন মোট এক লাখ ৪৮ হাজার ৮৮০ বোতল পানি বোতলজাত করা হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনুমোদনসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। খুলনা মহানগরী ও তেরখাদায় মিলে ৮জন পরিবেশক নিয়োগও দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে বোতলজাত পানিটি বাজারজাতকরণ সম্ভব হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির কাটিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথেই মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে পানিটি মার্কেটে ছাড়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি খুলনা বিভাগের কোথাও এই ধরনের প্রযুক্তি নেই। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উৎপাদিত সুন্দরবন পানি হবে বাজারের সেরা পানি। কুয়েটসহ বিভিন্নস্থানে পানির মান পরীক্ষা করা হয়েছে। নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে প্রতিদিনই এটা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
একাধিক সূত্র মতে, প্রতিদিন ৬৪ হাজার লিটার পানি বোতলজাত করা হবে পরিবেশনের জন্য। তার বিপরীতে মাত্র ৮জন পরিবেশক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ২১ জেলায় সুন্দরবন পানি পরিবেশন করা। কিন্তু তেমন সাড়া পড়েনি পরিবেশকদের মধ্যে। তাই মাত্র ৮ জন পরিবেশক দিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি দৈনিক বাজারজাত করা কতটুকু সম্ভব হবে, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।