‘পেটের কৃমি পুষ্টিলুটে, ঔষধ খেলে মুক্তি জোটে’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ (শনিবার) থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনায় পালিত হচ্ছে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ-২০২১। কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ চলাকালে খুলনা জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট সাত লাখ ৫৭ হাজার নয়শত ৪৬ শিক্ষার্থীকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে।
এ উপলক্ষ্যে সকালে খুলনা জেলার তেরখাদা সরকারি ইখড়ি কাটেংগা ফজলুল হক মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব বেগম মনিরা পারভীন।
তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম কামাল হোসেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শরাফাত হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম এবং মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শরাফাত হোসেন।
অতিথিরা বলেন, সরকার শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। কৃমি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। এজন্য সরকার শিশুদের সুরক্ষায় এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বছরে দুইবার এপ্রিল এবং অক্টোবর মাসে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রন সপ্তাহ পালন করা হয়। কৃমিনাশক ট্যাবলেটে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। শিক্ষার্থীরা ভরা পেটে স্কুলে উপস্থিত হওয়ার পরেই কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়।
এবারে খুলনা জেলার ৯টি উপজেলার এক হাজার ছয়শত ৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী দুই লাখ ২৩ হাজার চারশত ৫৮ জন শিক্ষার্থী এবং দুই হাজার একশত ৮৬টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৮৪ হাজার সাতশত ১৮ জন শিক্ষার্থীকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এছাড়া খুলনা মহানগরীর চারশত ৯৮টি প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী ৯৩ হাজার আটশত ৭২জন শিক্ষার্থী এবং ৯৩টি মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৫৫ হাজার আটশত ৯৮ জন শিক্ষার্থীকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সাত লাখ ৫৭ হাজার নয়শত ৪৬ শিশুকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে।
সপ্তাহব্যাপী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সমপর্যায়ের মাদ্রাসা, মক্তব ও এতিমখানাসমূহে ৫-১৬ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থী এবং স্কুল বহির্ভূত, ঝড়েপড়া, পথশিশু ও শ্রমজীবী শিশুদের বিনামূল্যে কৃমি নাশক ট্যাবলেট (মেবেন্ডাজল ৫০০ মি.গ্রাম) খাওয়ানো হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল কর্মসূচি, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রমের আওতায় খুলনা সিভিল সার্জন অফিস এ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।