চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনা থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অসংখ্য যাত্রীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত ১৪ আগস্ট থেকে চলছে এ অবস্থা। প্রায় প্রতিটি ট্রেনই খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন রুট থেকে ট্রেনগুলো খুলনায় পৌঁছাচ্ছেও ২ থেকে ৩ ঘণ্টা দেরিতে।
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় রেল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের বিপরীত পাশে দেখা যায়, ঢাকার ট্রেনের অপেক্ষায় অসংখ্য মানুষ বসে আছেন। প্লাটফর্মেও যাত্রীদের ভিড়। কেউ কেউ বিরক্ত হয়ে পায়চারি করছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকার বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান শনিবার সকাল সোয়া ৮টায়। ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে। সকাল ১১টায় তিনি জানান, অপেক্ষা করতে করতে স্ত্রী ও ছেলে মেয়েরা বিরক্ত হয়ে গেছে। ট্রেন যে কখন ছাড়বে সেটাও বুঝতে পারছেন না। সন্ধ্যার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
সাজ্জাদ হোসেন নামে আরেক ব্যক্তি ঈদের ছুটিতে এসেছিলেন খুলনায় গ্রামের বাড়িতে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ট্রেন না ছাড়ায় মা, স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করতে করতে তিনিও বিরক্ত। শেষ পর্যন্ত তার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসটি ৪ ঘণ্টা বিলম্বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে খুলনা ছাড়ে। ১২টা ৪০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার আগ মুহূর্তে শিউলি সুলতানা নামের এক যাত্রী বলেন, ‘এই ট্রেন ঢাকায় সন্ধ্যার দিকে পৌঁছানোর কথা ছিল। এখন পৌঁছাবে রাত ১১টা বা ১২টার দিকে। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে এত রাতে দুই শিশু সন্তান নিয়ে আমি মিরপুরে কিভাবে যাব ?’
খুলনা রেল স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে দূরপাল্লার বেশীরভাগ ট্রেনেরই সিডিউল বিপর্যয় চলছে। গতকাল সকাল সোয়া ৭টার উত্তরবঙ্গের চিলহাটিগ্রামী ট্রেনটি প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা দেরিতে ১০টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে যায়। গত শুক্রবার ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে। সেটি ছেড়েছে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। রাত ৮টা ৩০ মিনিটের ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছেড়ে যায় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। সকালের চিলহাটিগামী রকেট মেইল ট্রেনটিও প্রায় ২ ঘন্টা বিলম্বে ছেড়েছে।
খুলনা রেলওয়ের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার কাজী আমিরুল ইসলাম বলেন, ঈদের পর যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে ট্রেন যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। আগে যে স্টেশনে ৩ থেকে ৪ মিনিট ট্রেন দাঁড়াতো, এখন যাত্রী ওঠানামার জন্য সেখানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে দাঁড়াতে হচ্ছে। এ কারণে বিলম্ব হচ্ছে। দু’এক দিনের মধ্যে এ সংকট নিরসন হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।