অনলাইন ডেস্কঃখুলনা নগরী পরিষ্কার রাখতে ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন এক ঝাঁক তরুণ। বাসা বাড়ি, দোকান, হোটেল, হাসপাতালসহ সকল প্রকার প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে তার বিনিময়ে বিনা মূল্যে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিতরণ করছেন। ‘বর্জ্য দিন, গাছ নিন’ লেখা টি-শার্ট পরে স্বেচ্ছায় এ সকল কাজ করছেন তরুণের দলটি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ‘ইজি ডোর’ নামের একটি সংগঠন নগরীতে এ কাজ শুরু করেন। সংগঠনটি উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে বর্জ্যমুক্ত করা। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ওপেন দ্যা ডোর টু উইন দ্যা ফ্লোর’ এবং ‘শহরকে পরিষ্কার রাখুন ইজি ডোরের সঙ্গে থাকুন’ এই প্রত্যয় নিয়ে সংগঠন কাজ করছে।
বর্তমানে সংগঠনটি কাজ চলছে নগরীর ২৯নং ওয়ার্ডে। সম্প্রতি কাজ শেষ করেছে ২২ নং ওয়ার্ডে। সপ্তাহের প্রত্যেক শনিবার ওয়ার্ডটির দোকানে, ব্যবসায়ী ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানসহ বাসা বাড়িতে গিয়ে পচনশীল নয় এমন বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এদিকে অপচনশীল বর্জ্য ‘ইজি ডোর’ সংগঠনকে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে ৭২ সদস্যের বলেন্টিয়ার। বর্জ্য সংগ্রহ করার পর তাদের একটি তালিকা করা হয়। এরপর বর্জ্যগুলো বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়ে বিভিন্ন প্রকার গাছ ক্রয় করা হয়। পরবর্তীতে তালিকা অনুযায়ী বর্জ্য প্রদানকারীকে বিনামূল্যে গাছগুলো প্রদান করা হয়। সাধারণত পেপার, প্লাস্টিক, কার্টুনসহ অপচনশীল সকল বর্জ্যই সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রদান করা হচ্ছে আম, লিচু, অ্যালোবেরা, ক্যাকটাসসহ বিভিন্ন ওষুধি গাছ। প্রাথমিক অবস্থায় সংগঠনটির সকলের পকেট মানি দিয়েই এই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
‘ইজি ডোর’-এর ফাউন্ডার নগরীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্র তানভীর আহমেদ সজল বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিবেশ বাঁচাতে এবং গাছ রোপনে অনেক ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেটা দেখেই তিনি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এই সংগঠনটির কো-ফাউন্ডার রয়েছেন আহসান আহমেদ ও প্রীতিলতা। দু’জনই শিক্ষার্থী। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং বাসা-বাড়িতে থেকে অপচনশীল বর্জ্য সংগঠনটিকে দেওয়ার জন্য ৭২ সদস্যের বলেন্টিয়ার কাজ করছেন। যার কো-অর্ডিনেটার মোঃ ইমরান জাহান আরাফাত।
তানভীর আহমেদ সজল আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য অনেক বড়। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পকেট মানি দিয়ে সংগঠনের কাজ পরিচালনা করছেন। যে বর্জ্য আমরা সংগ্রহ করি তা বিক্রি করে গাছ কেনার টাকা হয় না। এক্ষেত্রে সম্মিলিত ভাবে সবাই মিলে টাকা দিয়ে গাছ কেনাসহ অন্যান্য সকল কাজ পরিচালনা করছি। ভবিষতে আমরা বড় ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে সংগ্রহ করা অপচনশীল বর্জ্য রিফাইন করে ব্যবসা করার ইচ্ছা রয়েছেন। চলতি বছর সংগঠনের কাজ শুরু হলেও গত বছরের আগস্ট থেকে নগরীতে বর্জ্যরে বিনিময়ে গাছ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অবজারভেশন করি। খুলনার মানুষ ভাল সাড়া দিয়েছে। তাই আমরা স্বেচ্ছায় নগরীকে পরিবেশ বান্ধব এবং গাছ রোপনে উৎসাহ করার জন্য মাঠে নেমেছি।