অনলাইন ডেস্কঃডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে। কোন রোগীর ডেঙ্গু হলে পূর্বে যে লক্ষণ প্রকাশ করত এখন সেটা ভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ করছে। আর বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি পরিমাণ বেশি। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন যে ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু হয়েছে সেখানেও উপযুক্ত পরিবেশের অভাব রয়েছে। গতকালও বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু বিরোধী প্রচার প্রচারণা চলছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়, পর্যাপ্ত বেড ছাড়া শুধুমাত্র ফোমের উপর মশারি টাঙ্গিয়ে চিকিৎসা চলছে ৪৬ জন ডেঙ্গু রোগীর। রোগী ও তাদের স্বজনেরা খালি পায়ে প্রবেশ করলেও চিকিৎসক নার্স ও হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জুতা পরে অবাধে চলাচল করছে, ফলে ময়লা অবস্থায় থাকছে ওয়ার্ডটি। এদিকে জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৬। এ নিয়ে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। ফলে অনেকটা অসহায় অবস্থায়ই চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে সকলকে। কোন রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমে দ্বিতীয় তলার মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে রিসিভ করিয়ে ডেঙ্গু সনাক্ত হলেই কেবল তাকে ওই ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হচ্ছে। যেটি আরও একটি ভোগান্তি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এটি একদিকে যেমন ডাক্তারদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক তেমনি রোগীদের জন্যও। চিকিৎসা পদ্ধতির এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সেই সাথে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চেয়ে সরকারি হাসপাতালেই রোগীরা বেশি ভিড় জমাচ্ছে। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফ্রি করার কারণে এ সুযোগটি নিচ্ছে রোগীরা।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় খুলনায় ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে বলে সিভিল সার্জনের দপ্তর জানিয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জন সরকারি হাসপাতালে এবং তিনজন ভর্তি হয় বেসরকারি হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালের মধ্যে খুমেক হাসপাতালে ৩১ জন, জেনারেল হাসপাতালে একজন এবং রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ভর্তি হয় বলে খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ এএসএম আব্দুর রাজ্জাক জানান। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে একজন করে রোগী গতকাল ভর্তি হয় বলেও তিনি জানান।
খুলনায় এ পর্যন্ত ২৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২২৬ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৭০ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে। বর্তমানে খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১২৭ জন রোগী এবং ছাড়পত্র নিয়েছে ১৬৯ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক দপ্তরের সহকারী পরিচালক (রোড নিয়ন্ত্রণ) ডাঃ ফেরদৌসী আক্তার বলেন, বিগত ২৪ ঘন্টায় বিভাগের ১০ জেলায় সর্বমোট ১৪৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৬ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ১২ জন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়। খুলনা বিভাগে এ পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১২৯০ জন। যার মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১১২৫ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ১৬৪ জন চিকিৎসা নেয় বলেও তিনি জানান।