সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা রবিবার , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
খুলনা -যশোর মহাসড়ক নির্মান প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই সড়কের বেহালদশা | চ্যানেল খুলনা

খুলনা -যশোর মহাসড়ক নির্মান প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই সড়কের বেহালদশা

ফকির শহিদুল ইসলামঃ দেশের দক্ষিনাঞ্চলের প্রধান খুলনা -যশোর মহাসড়ক নির্মান প্রকল্পের কাজে প্রথম থেকেই এই সড়ক নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পুরাতন রাস্তার পিচযুক্ত পাথর হলার করে নতুন রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ময়লাযুক্ত বালি ব্যবহার করা হয়েছে। সড়ক সংস্কার কাজে এক নম্বর বিটুমিন ব্যবহার করা হয়নি, মহাসড়কের স্কেরিফাইং (সড়ক খুড়ে তোলা) এবং সিলেট বালি, ষ্টোন ডাষ্ট ও পাথর দিয়ে ডিবিএস বেসকোর্স ঠিকভাবে না করা এবং ডিবিএস ওয়ারিং কোর্স সঠিকভাবে সম্পর্ন হয়নি বলে সড়ক নির্মান কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কের বেহাল দশা । এই মহাসড়কের কাজ তদারকীতে যশোর সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের গাফলতি ও নির্মান প্রকল্পে শুরু থেকেই সড়কের কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন স্থানীয়রা । ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিন্মমানের মালামাল এবং সড়কের পুরাতন বিটুমিনযুক্ত পাথর,ইট,সুরকি ও পুরাতন পাথরের সঙ্গে আবর্জনাযুক্ত বালু মিশিয়ে করে সড়কের মেরামত কাজ করায় এ সড়কে চলছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা। মহাসড়ক মানে ভারী যানবাহনের চলাচল । অথচ নতুন মেরামতকৃত এ সড়কে ভারী যানবাহন চলার চাপে ফুলেফেঁপে ওঠেছে যশোর-খুলনা মহাসড়ক। ফলে এটি কেটে মসৃন করতে হচ্ছে। সম্প্রতি ‘মিলিং মেশিন’ দিয়ে ঠেলে বেরিয়ে আসা সড়কের বিটুমিনের সারফেস বা উপরিতল কেটে ফেলা হয়। ঝুঁকি এড়িয়ে যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কটির এভাবে মেরামত করা হচ্ছে। তবে এটি সাময়িক সমাধান। উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে মহাসড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনরায় নির্মাণ করা হবে।

এমনটাই বলেছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের যশোর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, অতিরিক্ত ভারবাহী যান চলাচলের কারণে মহাসড়কটি ক্ষতির মুখে পড়েছে। এমনকি এই সড়কটি দিয়ে লাগাতার যান চলাচল করে। এরকম বিরতিহীন যান চলাচলের ফলে মহাসড়কটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে সংশ্লিষ্টদের অনেকে এমনও ধারণা করছেন, তীব্র তাপের কারণে মহাসড়কটির বিটুমিনের কার্পেটিং নরম হয়ে পড়ছে। যার ফলে অতিরিক্ত ভারবাহী যান চলাচলের সময় মহাসড়কটির উপরিভাগ ফুলেফেঁপে উঁচু হয়ে উঠছে।

নতুন মেরামতের এ মহাসড়কের এমন পরিস্থিতির আসল কারণ খুঁজে পেতে উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার বিষয়ে ভাবছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এজন্য তারা পরামর্শকও নিয়োগ করছে। বিভাগটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাউকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, মহাসড়কের খুলনা অভিমুখে ডান পাশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মহাসড়কটি একদিকে ফোলাফাঁপা ও উঁচুর পরিমাণ বেশি। এর কারণ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের যশোর কার্যালয় সূত্র বলছে, নওয়াপাড়া থেকে যখন মালবোঝাই করে ট্রাক-কার্ভাড ভ্যান সড়কের বাম পাশ ধরে ফিরে আসে। আর মাত্রাতিরিক্ত ভারবাহী মালবোঝাই এসব যানবাহনের চাপে সড়কটির ওই পাশ তখন মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ে। ফলে নির্মাণ কাজ শেষের আগেই মহাসড়কের প্রায় আট কিলোমিটার সৃষ্টি হয়েছে উঁচু নিচু আঁকাবাঁকা ঢেউ।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ সফিকুন নবী জানিয়েছেন, ভারী যানবাহনের চাপে মহাসড়কটির অনেক জায়গায় ফুলেফেঁপে উঠেছে। তবে এমনটি হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনও খুঁজে পাননি তারা। আর সেটি খতিয়ে দেখার জন্য উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।

জানা গেছে, যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। আর কাজ শেষ না হতেই এরই মধ্যে আট কিলোমিটার সড়ক ফুলে উঠেছে। এতে যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে।

সওজ সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের পূর্ণ নির্মাণ কাজ করা হয়েছে দুটি প্যাকেজে । ৩৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ মহাসড়কের নির্মান কাজে ব্যায় ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি টাকা । যশোর খুলনা মহাসড়কটির যশোর শহরের পালবাড়ি মোড় থেকে শুরু করে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত নতুন করে নির্মাণ চলছে। এর ২৭ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব অ্যান্ড ব্রাদার্স ও তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোং। এর মধ্যে আট কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। রাস্তা ফুলেফেঁপে ওঠায় যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

সড়কটি প্রশস্ততা ছিল ২৪ ফুট। এটি আরো ১০ ফুট বাড়িয়ে ৩৪ ফুট চওড়া ও দুই লেন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মহাসড়কে নতুন করে ভিত তৈরি করে সাড়ে চার ফুট থেকে পাঁচ ফুট গর্ত করে প্রথমে বালি ফিলিং, পরে বালি ও খোয়া এবং শেষে বালি ও পাথর মিশিয়ে ভরাট করার নিয়ম রয়েছে। এরপর বিটুমিন সারফেজ পাঁচ ইঞ্চি দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভারবোঝাই যানবাহনের চাপে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রকৃত কারণ খুঁজে পেতে পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনরায় নির্মাণ করা হবে।

এদিকে বসুন্দিয়া নামক স্থানে স্থানীয়দের সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তারা জানায়, বসুন্দিয়া বাজারের ১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোং, কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তার এমন বেহাল দশা। এলাকাবাসীর দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অতিদ্রুত রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ করা হয় ।

সূত্র জানায়, ১৯১৩ সালে যশোরের কালেক্টর জনসন প্রথম ২৪ ফুট প্রশস্ত যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেন। এরপর বিভিন্ন সময় মহাসড়কটির উন্নয়ন করা হলেও সম্প্রসারণ করা হয়নি। অনেকবার সংস্কার করা হলেও তা বেশি দিন টেকসই হচ্ছে না।
যশোর-খুলনা মহাসড়কটিও ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে আট ফুট প্রস্থ মহাসড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। পরে মহাসড়কটি সম্প্রসারণ করে ২৪ ফুট করা হয়। কিন্তু মহাসড়কটির অনেক অংশে ঢালাই ফেটে গেছে। এ কারণে মহাসড়কটি সংস্কার করা হলেও তা ভেঙে যাচ্ছে। ২০১৬ সালে যশোর-বেনাপোল ও যশোর-খুলনা মহাসড়ক দুটি পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এ জন্য প্রায় ৬৫৩ কোটি টাকার দুটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয় । পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) প্রকল্প দুটি অনুমোদন করে। একই বছর প্রকল্প দুটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ।

https://channelkhulna.tv/

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

সাবেক আইজিপি ও কেএমপি কমিশনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রের ওপর ডিম নিক্ষেপ

আমির হোসেন আমু গ্রেপ্তার

কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের ঢুকতে দেওয়া হবে না তাবলিগ জামাত

কালীগঞ্জে ভারতীয় গরু আনতে গিয়ে যুবক আটক

পাটের ব্যাগ পুনরায় সর্বত্র চালুর উদ্যোগ নিয়েছি : সাখাওয়াত

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।