বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (উব্লিউএইচও) উদ্যোগ ও অর্থায়ণে প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্বের পাঁচটি শহরকে স্বাস্থ্যকর শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশের খুলনা সেই পাঁচটি শহরের একটি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিএস), খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) এবং ডব্লিউএইচও যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) রাতে হোটেল সিটি ইন এ উপদেষ্টা কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সভাপতিত্ব করেন।
সভায় কারিগরি কমিটির প্রস্তুতকৃত ‘স্বাস্থ্যকর শহর : সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণে নগর সরকার’ শীর্ষক কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনা এবং এর ওপর বিশদ আলোচনা করা হয়। এই আলোচনায় অংশ নিয়ে খুলনাকে স্বাস্থ্যকর নগর হিসেবে গড়ে তুলতে কী ধরণের নীতিগত পরিবর্তন আনতে হবে, নগরে সেবাদানকারী বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা কী হবে, কীভাবে নানা ধরণের দূষণ রোধ করা যাবে, স্বল্প মেয়াদে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, কীভাবে সচেতনতা বাড়িয়ে নগরবাসীকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কিভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, কীভাবে সুশাসন নিশ্চিতকরা এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা যায় ইত্যাদি বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটির সদস্যবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য যে কোন মূল্যে খুলনাকে আন্তর্জাতিকমানের স্বাস্থ্যকর শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন নগরিকদের মানসিকতার পরিবর্তন। নাগরিকদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে এবং নগরে সেবাদানকারী বিভিন্ন সংস্থার সধ্যে সমন্বয়টা খুব প্রয়োজন। তিনি স্বাস্থ্যকর নগর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য খুলনাকে বেছে নেওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় কেসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালা, খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিএস কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রোবেদ আমীন, কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একেএম আব্দুল্লাহ, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ডব্লিউএইচও বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। কারিগরি কমিটির প্রস্তাবিত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন ডব্লিউএইচও’র খুলনা হেলদি সিটি প্রকল্পের কনসালটেন্ট আসিফ আহমেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্বাস্থ্য বিভাগ খুলনার পরিচালক ড. রাশেদা সুলতানা।
সভায় সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।