গ্যাসের দাম বাড়ালে জনগণ তা প্রতিরোধ করবে বলে সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তারেক রহমানের ১৩তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার দুর্নীতিকে ঢেকে রাখার জন্য সব রকম আর্থিক ব্যয় জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এখন তারা গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, গ্যাসের দাম বাড়ানো যাবে না। যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে অবশ্যই জনগণ তা প্রতিরোধ করবে।’
তারেক রহমান সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ পর্যন্ত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনা একটি অভিযোগও তারা প্রমাণ করতে পারেনি। যে বিচারক তাকে মুক্তি দিয়েছিলেন, সে বিচারককে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। সত্য কথা বলার জন্য প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ এ দেশে গণতন্ত্র নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। বিদেশি মিডিয়ায় বলা হয়, বাংলাদেশ এখন উত্তর কোরিয়া হয়ে গেছে। যেখানে মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই। এই চক্র আমাদের ভাঙতে হবে, এই বুহ্য আমাদের ভাঙতে হবে। ভেঙে অন্ধকার থেকে আলোতে বেরিয়ে আসতে হবে। আসুন, আজকের এই দিবসে আমাদের নেতাকে মুক্ত করার জন্য, আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য শপথ গ্রহণ করব।‘
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি শক্তি সাধারণ মানুষের কাছে। আমরা বার বার লক্ষ করেছি, বিএনপিকে যতই ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়, বিএনপি আবার ফিনিক্স পাখির মতোই জেগে ওঠে। কারণ, বিএনপির রাজনীতি মানুষের অন্তরে গেঁথে গেছে। বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রাজনীতি, স্বকীয় রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকার রাজনীতি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, যতই অত্যাচার আসুক, নির্যাতন আসুক, নিপীড়ন আসুক। আমরা এই জাতীয়তাবাদের রাজনীতিকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। কারণ, আমাদের এই রাজনীতি স্বাধীনতার রাজনীতি, শৃঙ্খলিত হয়ে গোলামির রাজনীতি নয়।’
কারাবন্দি খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গত পরশু জেলখানার কোর্টে গিয়েছিলাম। ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হয়েছিল্। আমি সেই দৃশ্য আপনাদের বলতে পারব না। যে নেতাকে আমরা দেখেছি হেঁটে সুন্দরভাবে চলে গেলেন এবং আমাদের বলে গেলেন আন্দোলন সংগ্রাম চলমান রাখবে, ঐক্যবদ্ধ থাকবে, সেই নেতাকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি প্রথম বারের মতো বলেছেন, আমি অসুস্থ, ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি অসুখে।’
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল অংশ নেওয়ায় বিএনপি খুশি হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুশি হয়েছি ছাত্রদল ডাকসুতে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়। ছাত্রদলের অস্তিত্ব সেখানে প্রমাণ করার জন্য এ অংশগ্রহণ প্রয়োজন ছিল। এটাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
মীর হেলালের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ, বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম মঞ্জু, আমীরুল ইসলাম আলিম, কবি আবদুল হাই সিকদারসহ অনেকে।