ক্রীড়া ডেস্কঃপঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট আয়োজন করলেও এর আগে ঘরের মাঠে মাত্র একবারই ফাইনাল খেলেছিল তিনবারের ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড। সেবার উইন্ডিজের কাছে হেরে শিরোপার স্বপ্ন ভঙ্গ হয় ইংলিশদের। ৫০ বছর পর আবারও নিজেদের মাঠে ফাইনাল খেলার সুযোগ (সম্ভবত) পাচ্ছে ক্রিকেটের জনকরা।
তবে তার জন্য টপকাতে হবে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ২২৪ রানের সহজ লক্ষ্য। দ্বাদশ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ইংলিশ বোলিং তোপে ৪৯ ওভারে সবকয়টি উইকেট বিলিয়ে ২২৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি ক্যাঙ্গারুরা। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন দলটির সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ।
বার্মিংহামের এজবাস্টনে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হয় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইংলিশ পেসারদের তোপের মুখে পড়ে ওপেনাররা। প্রথম ওভার কোনোভাবে কাটিয়ে দিতে পারলেও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই জোফরা আর্চারকে ঠিকমতো খেলতে পারেননি ফিঞ্চ। এলবির ফাঁদে পড়ে গোল্ডেন ডাক মেরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
শূন্য রানে তার বিদায়ের পর চলতি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারও ফেরেন হতাশ হয়ে। ১১ বলে ৯ রান করা এই ওপেনার ওকসের দুর্দান্ত এক বাউন্সারে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে স্লিপে বেয়ারস্টর হাতে ক্যাচ দেন। অস্ট্রেলিয়ার দলীয় রান তখন ১০।
স্মিথকে সঙ্গী করে বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচটা রাঙাতে চেয়েছিলেন হ্যান্ডসকম্ব। কিন্তু মাত্র ৪ রানের জুটি হলো তাদের। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই ক্রিস ওকসের আঘাত। এবার খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন অভিষিক্ত এই ক্রিকেটার। ১২ বলে ৪ রান করে আউট হন তিনি।
ইনিংনের ২৮তম ওভারে ইংলিশ লেগ স্পিনার আদিল রশিদের মায়াবী ঘূর্ণি ফাঁদে পড়ে পরিবর্তিত ফিল্ডার জেমস ভিন্সের হাতে ক্যাচ দেন উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া অ্যালেক্স ক্যারে। ৭০ বল খেলে ৪৬ রান করে আউট হন তিনি। এরপর একই ওভারের শেষ বলে আদিল রশিদের বলটা ঠিকমতো বুঝতে পারেননি মার্কাস স্টইনিস। এলবির ফাঁদে পড়ে খালি হাতেই ফিরতে হয় স্টইনিসকে।
স্টইনিসের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ঠান্ডা মাথার ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সুযোগ বুঝে শটও খেলছিলেন তিনি। কিন্তু জোফরা আর্চারের স্লোয়ার ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না। সহজ ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন ২২ রানে। এরই মধ্যে আদিল রশিদ নিজের তৃতীয় শিকার বানান প্যাট কামিন্সকে। শুরু থেকেই পরীক্ষা দেওয়া অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান স্লিপে জো রুটকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন ৬ রানে।
দল যখন আবারও খাদের কিনারায় তখন মিচেল স্টার্ককে সঙ্গী করে আবারও এগোতে থাকেন স্মিথ। দুইজন গড়েন ৫১ রানের জুটিও। কিন্তু জস বাটলারের সরাসরি স্টাম্পিংয়ে ৮৫ রানে ফিরতে হয় দলের ভরসার কেন্দ্রবিন্দু স্মিথকে। রান আউট হওয়ার পর্বে ১১৯ বলে ৬ চারে ৮৫ করেন স্মিথ। স্টার্কও ২৯ রানে সাজঘরে ফিরেন।
ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রিস ওকস এবং আদিল রশিদ নেন তিনটি করে উইকেট। এছাড়া জোফরা আর্চার দুটি ও মার্ক উড বাকি একটি উইকেট শিকার করেন।
ইংল্যান্ড একাদশ : জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, ইউইন মরগান (অধিনায়ক),বেন স্টোকস, জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), ক্রিস ওকস, আদিল রশিদ, জোফরা আর্চার, লিয়াম প্লাঙ্কেট ও মার্ক উড।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ : অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, পিটার হ্যান্ডসকম্ব, মার্কাস স্টয়িনিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যালেক্স ক্যারে (উইকেটরক্ষক), প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, নাথান কোল্টার নাইল ও জেসন বেহরেনডর্ফ।