প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণে ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর নানা জটিলতার কারণে এখনও অনেক শিক্ষার্থী সার্ভারে এন্ট্রি দিতে পারেনি। এসব শিক্ষার্থীকে সুযোগ দিতে চতুর্থ দফায় আরও দশদিন সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে বাদ পড়া শিক্ষার্থীরা ডাটা এন্ট্রি করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্প থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশের সব বিভাগীয় শিক্ষা অফিস, জেলা অফিসে তা পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ম ও ২য় কিস্তির সুবিধাভোগীদের তথ্য উপবৃত্তি ‘নগদ’ পোর্টালে আপলোডের জন্য ১৫ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে নগদের পোর্টাল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এ সময়সীমা কোনোভাবেই বাড়ানো হবে না।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ৪র্থ কিস্তির (এপ্রিল-জুন/২০২০) উপবৃত্তির অর্থ বিতরণের সময় ১ম ধাপে সুবিধাভোগীদের তথ্য ও ২য় ধাপে চাহিদাপত্র এন্ট্রি করা হয়েছিল। দুইটি পর্যায়ে কাজ করতে বেশি সময়ক্ষেপণ হয়েছে। এজন্য এখন হতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একবারেই চাহিদাসহ সুবিধাভোগীদের তথ্য এন্ট্রি করতে হবে।
এ বিষয়ে কোনো সমস্যা/অস্পষ্টতা থাকলে ডাটা এন্ট্রির নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রধান শিক্ষককে জেলা মনিটরিং কর্মকর্তা/নগদ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কিংবা প্রকল্প কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এর আগে সর্বশেষ ২৫ জানুয়ারি তৃতীয় দফা তথ্য দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এরপরও যারা বাকি ছিল তাদেরও উপবৃত্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ আলী বলেন, গত বছরের দ্বিতীয় কিস্তির বকেয়া টাকা গত মাসে বিতরণ করা শেষ হয়েছে। যাদের তথ্যে ত্রুটি আছে তাদের এ কিস্তির টাকা দেওয়া হয়নি। তবে তথ্য আপডেট করলে পরবর্তী কিস্তির টাকা পাবে।
তিনি আরও বলেন, সার্ভারে শতভাগ তথ্য আপলোড করা না হলেও কাউকে উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি জানান, চলতি মাসের ১৫ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত নতুন করে তথ্য আপলোডের সুযোগ দেওয়া হবে স্কুল শিক্ষকদের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের তথ্য আপলোড করা হলে পরবর্তী সময়ে উপবৃত্তির টাকা পাবে।
গত বছর ১৩ ডিসেম্বর উপবৃত্তি বিতরণের দশমিক ৭৫ পয়সা সার্ভিস চার্জ ধরে ‘নগদ’-এর সঙ্গে চুক্তি করে প্রাথমিক উপবৃত্তি প্রকল্প। চুক্তি অনুযায়ী, জিটুপি (সরকার টু পাবলিক) পদ্ধতিতে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করবে নগদ। উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন এবং মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ডাটা এন্ট্রি বাধ্যতামূলক করা হয়। এতে জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার কারণে শুরু থেকেই ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করে নানা জটিলতায় পড়ে শিক্ষক-অভিভাবকরা।
পাশাপাশি, নগদের সার্ভারে সমস্যা, মফস্বল এলাকায় ইন্টারনেটের ধীরগতি, মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা এবং প্রদত্ত ঠিকানায় গিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের খুঁজে না পাওয়ার কারণে ডাটা এন্ট্রির কাজ চলে কচ্ছপ গতিতে।