খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক বিশ্বের সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে বায়োটেকনোলজি। ৭০ দশকে এটি উৎপত্তির পর আস্তে আস্তে এর প্রভাব ও প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য, শিল্প কল-কারখানায় এর প্রভাব রয়েছে। বায়োটেকনোলজির কল্যাণে আমরা উচ্চ ফলনশীল ফসল উৎপাদন করতে পারছি। বর্তমানে প্রযুক্তি নির্ভর এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব, দূষণ মোকাবেলায় বায়োটেকনোলজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আধুনিক বিশ্বের চাহিদার প্রেক্ষিতে ন্যানো বায়োটেকনোলজির প্রভাব দিন দিন বেড়ে চলছে। গবেষক ও শিক্ষার্থীরা এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি, চিকিৎসা বিজ্ঞান, মৎস্য, খাদ্য সবক্ষেত্রে গবেষণার নতুন নতুন দ্বার খুলছে। আধুনিক বিশ্ব এতে উপকৃত হচ্ছে।
উপাচার্য বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে বায়োটেকনোলজি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এই সেমিনার থেকে উঠে আসবে এবং তা থেকে গবেষণার বিষয়বস্তুর সন্ধান পাওয়া যাবে, আমরা বুঝতে পারবো কোথায় গবেষণা করা প্রয়োজন। যা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উপকারে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আমাদের দক্ষ ও দেশপ্রেমিক জনশক্তি তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাতে শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এটি প্রভাব ফেলবে বলে আমি আশা করি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) ডিসিপ্লিন আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বায়োটেকনোলজি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ ০৪ জুন (রবিবার) সকাল ১০.১৫ মিনিটে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মানে যে সবকিছু রোবটিক্স বা আর্টিফিশিয়াল হবে এমন নয়। ডাটা এবং ইনফরমেশনের মাধ্যমে আমরা যে প্রযুক্তি পাচ্ছি এটাই হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। বায়োটেকনোলজিতে যত ডাটা এবং ইনফরমেশন আছে, তা দিয়ে পৃথিবী বদলে দেওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে ১০ হাজার ভাইরাস অপেক্ষা করছে। এগুলো খুব শীঘ্রই চলে আসবে। আমাদের এখন প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। প্রযুক্তি যাতে মানুষের কল্যাণে আসে এবং আমরা যাতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে পারি সেজন্য নিজেদেরকে স্মার্ট হতে হবে।
বিজিই ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শেখ জুলফিকার হোসেন এর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর প্লান্ট টিস্যু কালচার এন্ড বায়োটেকনোলজির সভাপতি প্রফেসর ড. রাখা হরি সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর রিসোর্স পারসন হিসেবে টেকনিক্যাল সেশন পরিচালনা করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর প্লান্ট টিস্যু কালচার এন্ড বায়োটেকনোলজির সভাপতি প্রফেসর ড. রাখা হরি সরকার, বিজিই ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শেখ জুলফিকার হোসেন, ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক ড. অরুণ কান্তি বোস এবং পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়ার উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান। সেমিনারে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।