বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার গণ মিলন ফাউন্ডেশনের অনিয়ন ও দুর্নীতি আবারো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এলাকার নিরীহ জনসাধারণ ওই এনজিওটির নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে। গণ মিলনের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঋণ বিতরণের সময় ফাঁকা চেক নিয়ে নিজেদের ইচ্ছা মত অংক বসিয়ে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে গ্রাহক হয়রানি করে আসছে। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় এ সব অভিযোগ তুলে ধরে গণ মিলন ফাউন্ডেশনের খারাপ আচারণ, মানষিক নির্যাতন, হুমকি-ধামকি ও মামলা থেকে রেহাই পেতে চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলণ করেছেন সদর বাজারের পুস্তক ব্যবসায়ী তাপস বাড়ই (৪০)।
সবাংদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তাপস বাড়ই আরও জানান, তিনি একজন শিক্ষিত যুবক। চাকুরী না হওয়ায় একযুগ আগে এনজিও থেকে লোন নিয়ে চিতলমারী সদর বাজারে বই ব্যবসা শুরু করেন। তার আয়ে বৃদ্ধ মা-বাবাসহ ৬ সদস্যের পরিবার চলে। বর্তমানে স্থানীয় গণ মিলন ফাউন্ডেশনের খারাপ আচারণ, মানষিক, নির্যাতন ও মামলার কারণে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এনজিওটির কাছ থেকে তিনি ২ লাখ টাকায় প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা সুদে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে উক্ত টাকা কিস্তি আকারে ধার্য হয়। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে লকডাউনের সময় ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারায় মানুষের কাছে তার লাখ লাখ টাকা পাওনা থাকলে তা আদায় করে পারেন নাই। ওই সময়ে সরকারিভাবে কিস্তি আদায় বন্ধ ছিল। তখনও গণমিলন ফাউন্ডেশন কিস্তি আদায়ের জন্য তাকে নির্মমভাবে মানষিক নির্যাতন চালিয়েছে। পরবর্তীতে তিনি কোন উপায় না পেয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিটন আলীর কাছে লিখিত আবেদন করেন। কোভিড পরিবেশ স্বাভাবিক হলে তিনি গণ মিলনের পাওনা প্রায় সব টাকা পরিশোধ করেন। সঞ্চয় বাবদ তার পাওনা টাকা থাকায় তিনি ২০ হাজার ১০০ টাকা পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে তাদের স্থানীয়ভাবে মিমাংসার কথা ছিল। কিন্তু গণ মিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনিজিত কুমার বিশ্বাস ও সমন্বয়কারী মোঃ শামছুল ইসলাম তার কাছে করোনার সময়ে বন্ধ থাকা কিস্তির সুদ বাবদ ২৫ হাজার ২০০ টাকা বেশি গ্রহণ করেছেন। পরে তারা তার কাছে বাড়তি সুদ বাবদ আরও ৭ হাজার ২০০ টাকা দাবি করেন। উক্ত টাকা দিতে তিনি দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় এনজিও কর্মকর্তারা ঋণ গ্রহণ করার সময়ে তাপস বাড়ইয়ের জমা রাখা ফাঁকা চেকে নিজেদের ইচ্ছা মাফিক অংক বসিয়ে তার নামে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ও হয়রানি করে আসছেন। মামলা, হুমকি-ধামকি ও হয়রানিতে তার গোটা পরিবার বির্পযস্থ হয়ে পড়েছে। তাপস বাড়ই বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
গণ মিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘তাপস আগেও ইউএনও’র কাছে আমার নামে অভিযোগ করেছে। তাতে কি হয়েছে? তাপসের ঋণের বিষয়টি অফিসের সামছু ভালো বলতে পারবে। আপনারা তার সাথে কথা বলেন।’
এ ব্যাপারে গণ মিলন ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী মোঃ সামছুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার সময় সরকারিভাবে ছুটি ছিল। অফিসের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই বন্ধের সময়ে কিস্তির অতিরিক্ত সুদের টাকা নেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতি লাখে মাসে ২ হাজার টাকা করে সুদ নেই। তাপসের কাছে আমাদের ২০ হাজার ১০০ টাকা থাকলেও মামলা পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত ৭ হাজার ২০০ টাকা ধার্য করেছি।’