ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চোর অপবাদ দিয়ে এক স্কুলছাত্রকে বেদম পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের কোন্দারদিয়া গ্রামে। ৫ম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রকে মারাত্মক আহতাবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। সারা শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছে ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, দাদপুর ইউনিয়নের কোন্দারদিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক রাজা মোল্যার পুত্র ও স্থানীয় রাঙামুলারকান্দি স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্র মো. সাব্বির মোল্যা (১২) সোমবার ফজর নামাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ির অদূরে মসজিদে যাচ্ছিল। মসজিদে যাওয়ার পথে গাছগাছালি ঘেরা বাগান পার হতে হয়। সাব্বির মোল্যা ভয়ের কারণে বাগানটি এড়িয়ে জনৈক মাজেদ মাস্টারের বাড়ির উঠোনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বাড়ির লোকজন সাব্বিরকে ধরে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়। পরে মাজেদ মাস্টারের ছেলে ফারুক, জিয়াদ ও মাজেদ মাস্টারের নাতি হাসিব লাঠি দিয়ে সাব্বিরকে বেদমভাবে প্রহার করে। এ সময় তারা হাতের নখ প্লাস দিয়ে তুলে ফেলার চেষ্টা করলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে সাব্বিরের বাবা-মা সেখান থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সাব্বিরের বাবা রাজা মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রী মাজেদ মাস্টারের বাসায় দীর্ঘ ৬ বছর ধরে কাজ করে আসছিল। গত কয়েক মাস আগে অসুস্থতার কারণে সে আর কাজ করতে পারবে না বলে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাজেদ মাস্টার। বিভিন্ন সময় মাজেদ মাস্টার ও তার ছেলেরা আমার ছেলে সাব্বিরকে তাদের বাড়ির কাজ করে দিতে বলে। কিন্তু আমার ছেলে তাদের কাজ না করায় দেখে নেবার হুমকি দেয়।
সাব্বিরের মা মোসা. পানোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা অমানুষিক নির্যাতন করেছে তাদের বিচার চাই। আমরা গরিব মানুষ বলে আমাদের ওপর এমন অত্যাচার কেন করা হবে।
এ বিষয়ে মাজেদ মাস্টারের ছেলে ফারুক বলেন, এ বিষয়ে আপনার সাথে দেখা করে কথা বলবো। আমি এখন ব্যস্ত আছি বলেই ফোনটি কেটে দেয়। বোয়ালমারী থানার ওসি জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।