চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃপড়ব বই, গড়ব দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’-এই শ্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া মুজিববর্ষ একুশে বইমেলার সপ্তম দিন অতিবাহিত হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা যেন চির চেনা রূপ ফিরে পেয়েছে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত নগরীর বয়রাস্থ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী বইমেলার গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকেই বইপ্রেমীদের পদচারণা শুরু হয়। আর সন্ধ্যা গড়িয়ে আসতেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে প্রাণের মেলা প্রাঙ্গণ। বইমেলার স্টলে স্টলে ভিড় করছেন বইপ্রেমীরা। কেউ কেউ বই কিনছেন, অনেকে আবার ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন, অনেকে প্রিয় লেখকের বই খুঁজছেন ঘুরে ঘুরে। এদিন বইপ্রেমীদের পাশাপাশি মেলামঞ্চেও ছিল দর্শকস্রোতাদের সমাগম।
খালিশপুর বঙ্গবাসী এলাকা থেকে আসা হাফিজুর রহমান নাঈম বলেন, মেলায় ঘুরতে এসেছি। এবারের মেলায় আজ প্রথম এলাম। ভালো লাগছে। মেলায় অনেক ভীড়। স্টলে স্টলে ঘুরেছি।
বাক আবৃত্তি স্টলের মালিক সুলতাম মাহমুদ শ্রাবণ বলেন, মেলার প্রথম সপ্তাহ হওয়ায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও বিক্রি কম। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যা অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি। এক সপ্তাহে আজ (গতকাল) মেলা স্বরূপ ফিরে পেয়েছে। তিনি বলেন, এবার শুক্রবারের দিন ১৪ ফেব্র“য়ারি ও ২১ ফেব্র“য়ারি হওয়ায় একটু সমস্যা হলো। তবে দিন যত অতিবাহিত হবে বেচাকেনাও বাড়বে। কালো প্রকাশনীর প্রতিনিধি মাহবুব বলেন, মেলায় এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক বেচাকেনা হচ্ছে।
মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত লেখক কুঞ্জে বসে থাকা কবি আবু আসলাম বাবু বলেন, মেলায় লেখক-পাঠক-কবি-সাহিত্যিকদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। ছুটির দিন থাকায় অনেকেই এসেছেন। মেলা জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে উঠছে।
খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক ও একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. মোঃ আহসান উল্যাহ জানান, এবারের মেলার সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। মেলায় দিন দিন বইপ্রেমীদের ভীড় বাড়ছে। ছুটির দিন থাকায় শুক্রবার মেলায় বইপ্রেমী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। গত ১ ফেব্র“য়ারি শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২৯ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত। এবারের বই মেলায় বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা, সাহিত্য সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও লাইব্রেরিসহ ১০৫টি স্টল অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিদিন বিকালে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। একই সাথে শিশুদের জন্য উপস্থিত বক্তৃতা, আবৃত্তি, নতুন লেখকদের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, চিত্রাঙ্কন, সঙ্গীত ও বইপাঠ প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রয়েছে। সবমিলিয়ে বইমেলা যেন চীর চেনা রুপ ফিরেছে।
মেলামঞ্চের আয়োজন : খুলনা জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বেলা ১১টায় বইমেলার মঞ্চে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৪টায় বইমেলার মঞ্চে প্রভাতী স্কুল খালিশপুর খুলনার ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। বিকেল ৫টায় মোহনা’র শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এছাড়া সন্ধ্যা ৬.১০ মিনিটে অবকাশ’র বাচিক শিল্পীদের পরিবেশনায় আবৃত্তি পরিবেশনা হয়। পরিশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে নজরুল সঙ্গীত শিল্পী পরিষদ ও জ্ঞান বিকাশ সঙ্গীত একাডেমি খুলনার শিল্পীবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাবিত্রী গাইন, শেখ আসাদুজ্জামান মিথু ও কাজী গোলাম সারোয়ার।