অনলাইন ডেস্কঃ চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়কালে দেশে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধিসহ মোট ২০৮৩ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মহিলা পরিষদ আয়োজিত ‘বর্তমান জাতীয় পরিস্থিতি, অব্যাহত নারী-শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ ও সামাজিক নিরাপত্তার দাবিতে’ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। মহিলা পরিষদের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানম। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এ্যাডভোকেসি পরিচালক এড. মাকছুদা আখতার লাইলী।
মহিলা পরিষদ সংরক্ষিত ১৪টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে এ তথ্য দিয়েছে। এতে বলা হয়, দেশে এ সময়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে মোট ৭৩১টি। তার মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৯২ জন, গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৩ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৬ জনকে, এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১২৩ জনকে।
একই তথ্য অনুসারে ২০১৪-২০১৮ এই সময়কালে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধিসহ মোট ৫২৭৪ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৩৯৮০ জন তার মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৪৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩৪৯ জনকে, এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৭৩০ জনকে।
সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, সারাদেশে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা অতীতের যে কোন সময়ের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে।
এ ব্যাপারে পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান সহ সকল জনগণের উদ্যোগে প্রচার অভিযান এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি নারী আন্দোলনের এই সুপারিশগুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে আহ্বান জানান। তিনি ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স ঘোষণার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় নারী ও কন্যার প্রতি এই ধরণের সহিংসতা নারীর অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করছে এবং নারীর স্বাধীন চলাচল ও উন্নয়নের ধারার গতি ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সমাজের মধ্যে নানা ধরনের অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতার পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার বিষয়টি একটি বিশেষ পরিস্থিতি হিসেবে ঘোষণা করে সমগ্র জাতিকে এই বিষয়টিকে জাতীয় সমস্যা বিবেচনা করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।