সুমন সাহা :: বাংলাদেশের উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। পৃথক তিন গবেষণায় উঠে এসেছে এই চিত্র। গবেষণাগুলোতে বলা হচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যে হারে বাড়ছে, তাতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত বা লবণাক্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে উপকূলের ৪টি জেলার ৮ থেকে ১৫ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে উপকূলীয় জেলাগুলোর লবণাক্ততাও। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে উপকূলের প্রতিবেশ, মানুষের জীবনযাপন, কৃষি, ভূগর্ভস্থ পানি ও অবকাঠামোর ওপর।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আইডব্লিউএফএম (ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট) ও সরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) সম্প্রতি এ তিনটি গবেষণা করেছে। ৮ মে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণার ফলাফল।
হাতে পরিচালিত টাইডাল স্টেশনের উপাত্ত নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়। এটা স্বাভাবিক ছিল না। বর্তমান গবেষণায় উপগ্রহের সহায়তায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা মাপার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটা সারা বিশ্বে এখন স্বীকৃত পদ্ধতি।
বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট প্রকল্পের অর্থায়নে করা হয়েছে এসব গবেষণা।
গবেষণাগুলোর মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা নিয়ে ‘এস্টিমেশন অব সি লেভেল রাইজ ইন বাংলাদেশ ইউজিং স্যাটেলাইট আলটিমেট্রি ডেটা’ শীর্ষক গবেষণাটি করেছে বুয়েট। এখানে প্রথমবারের মতো উপগ্রহচিত্র ব্যবহার করে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয়টি দেখা হয়েছে। আর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যতে পানি, কৃষি অবকাঠামোর ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বাকি দুই গবেষণা করেছে সিইজিআইএস।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং এর সম্ভাব্য ফল নিয়ে তিনটি গবেষণা পরিবেশ অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ প্যানেল গ্রহণ ও অনুমোদন করেছে। এটি প্রকাশিত হয়েছে অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ওই সময়ে গঙ্গা উপকূলীয় প্লাবনভূমিতে প্রতিবছর ৫ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার উচ্চতা বেড়েছে। মেঘনা মোহনার প্লাবনভূমির উচ্চতা বেড়েছে ৪ দশমিক ২ থেকে ৫ দশমিক ৩ মিলিমিটার। আর চট্টগ্রাম উপকূলে বৃদ্ধির হার প্রতিবছর ৩ দশমিক ৭ থেকে ৪ দশমিক ২ মিলিমিটার।
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। আগেই বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এরই মধ্যে উপকূলে লবণাক্ততা বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির বর্তমান অবস্থা উপগ্রহে তোলা চিত্রে দেখা হয়েছে এ গবেষণায়। পরিবেশ অধিদপ্তর এর আগে ৩০ বছরের সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির হার বিবেচনা করে একটি গবেষণা পরিচালনা করে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ১৮৩টি পানি মাপার ক্ষেত্র থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু প্রথাগত পদ্ধতিতে (টাইডাল গেজ) উপাত্তগুলো হাতে লিখে সংরক্ষণ করা হতো। সেখানে অস্পষ্টতা ছিল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উচ্চতার অস্বাভাবিক বৃদ্ধিও দেখা যায়। যেমন খুলনা উপকূলে উচ্চতা বৃদ্ধি ৬ থেকে ২১ মিলিমিটার পর্যন্ত দেখা যায়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলী বলেন, হাতে পরিচালিত টাইডাল স্টেশনের উপাত্ত নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়। এটা স্বাভাবিক ছিল না। বর্তমান গবেষণায় উপগ্রহের সহায়তায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা মাপার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটা সারা বিশ্বে এখন স্বীকৃত পদ্ধতি।
গবেষণায় কৃষি, পানিসম্পদ ও অবকাঠামোর ওপর এ উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব নিরূপণের চেষ্টা করা হয়েছে।
আইডব্লিউএফএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের এ উচ্চতা বৃদ্ধি অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। এ কারণে উপকূলের প্রতিবেশব্যবস্থা, ভূগর্ভস্থ পানিতে লবণাক্ততা ও অবকাঠামোর ক্ষতি হতে পারে। এতে খাদ্যনিরাপত্তার সংকট ভবিষ্যতে বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।
আইডব্লিউএফএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট আলটিমেট্রি মহাকাশ থেকে পানির স্তরের পরিমাপ করে সমস্যার খুব ভালো সমাধান দিতে পারে। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ১৯৯৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গঙ্গার উপকূলীয় প্লাবনভূমি, মেঘনা মোহনার প্লাবনভূমি ও চট্টগ্রাম উপকূলের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে গবেষণায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ওই সময়ে গঙ্গা উপকূলীয় প্লাবনভূমিতে প্রতিবছর ৫ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার উচ্চতা বেড়েছে। মেঘনা মোহনার প্লাবনভূমির উচ্চতা বেড়েছে ৪ দশমিক ২ থেকে ৫ দশমিক ৩ মিলিমিটার। আর চট্টগ্রাম উপকূলে বৃদ্ধির হার প্রতিবছর ৩ দশমিক ৭ থেকে ৪ দশমিক ২ মিলিমিটার।
গবেষক দলের প্রধান ও আইডব্লিউএফএমের অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ভূমি ধীরে ধীরে দেবে (সাবসিডেন্স) যাচ্ছে। বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে বাংলাদেশের উপকূলের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির হার অনেকটাই বেশি। যেমন গঙ্গা প্লাবনভূমিতে প্রতিবছর ১২ দশমিক ৩ থেকে ১২ দশমিক ৮ মিলিমিটার, মেঘনা মোহনার প্লাবনভূমিতে ৯ দশমিক ৪ থেকে ৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রাম উপকূলে ৭ দশমিক ৭ থেকে ৯ দশমিক ২ মিলিমিটার উচ্চতা বাড়ছে।
আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ১৯৯৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গড় উচ্চতা বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার। অর্থাৎ বৈশ্বিক গড় বৃদ্ধির চেয়ে দেশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে দ্রুত
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধির হার ১৯৯৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছিল প্রতিবছর ৩ দশমিক ৪২ মিলিমিটার।
আইপিসিসির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ১৯৯৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গড় উচ্চতা বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার। অর্থাৎ বৈশ্বিক গড় বৃদ্ধির চেয়ে দেশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে দ্রুত।’
আইডব্লিউএফএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের এ উচ্চতা বৃদ্ধি অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। এ কারণে উপকূলের প্রতিবেশব্যবস্থা, ভূগর্ভস্থ পানিতে লবণাক্ততা ও অবকাঠামোর ক্ষতি হতে পারে। এতে খাদ্যনিরাপত্তার সংকট ভবিষ্যতে বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।
উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য ফলাফল
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দাতিনাখালী গ্রামের বাসিন্দা শেফালী বিবির (৫৫) কাছে প্রতিদিনের উদ্বেগের বিষয় সুপেয় পানি। তাঁর পরিবারে সুপেয় পানির মূল উৎস ছিল বাড়ির কাছের পুকুর। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলা আঘাত হানার পর সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পুকুরটির পানি লবণাক্ত হয়ে যায়। এখন প্রতিদিন দেড় কিলোমিটার দূরের পুকুর থেকে পানি আনতে হয়।
দূরে গিয়ে পানি আনা প্রতিদিন সম্ভব হয় না শেফালী বিবি বা তাঁর ছয় সদস্যের পরিবারের অন্যদের পক্ষে। তবে এক কিলোমিটার দূরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। বছরে ৫০০ টাকা দিয়ে সেখান থেকে প্রতিদিন দুই ঘড়া (কলস বা কলসজাতীয় মৃৎপাত্র) পানি পায় পরিবারটি।
শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের এই নারীর তাই আক্ষেপ, ‘কন দিনি, এই গরমে দুই ঘড়া পানি দি পরিবার চলে? কী কষ্ট যে করতিছি, তা কবেকে।’
শেফালী বিবির বাড়ির কাছেই চুনা নদী। উপকূলীয় এ নদীতে আগে বর্ষা মৌসুমে অন্তত মিঠাপানির প্রবাহ ছিল। কিন্তু এখন বর্ষা মৌসুমের বড় সময়জুড়ে থাকছে লবণাক্ততা।
প্রকৃতির এ পাল্টে যাওয়া চেহারা উপকূলের মানুষ এখন দেখছেন প্রতিনিয়ত। এ অবস্থা তাঁদের অনেকের কষ্টের কারণ হয়ে উঠেছে।
এ কষ্ট যে ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে, তিন গবেষণার মধ্যে দুটিতে সেই চিত্রই উঠে এসেছে।
নদীর পানিপ্রবাহ, ঝড়ের গতি ও লবণাক্ততার তিনটি মডেল ব্যবহার করে সিইজিআইএসের গবেষকেরা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য প্রভাব তুলে ধরেছেন। দুই গবেষণায় দেখানো হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার (৫.০ মিলিমিটার X ১০০ বছর) বাড়লে দেশের উপকূলীয় এলাকায় ৮ শতাংশ, ৬২ সেন্টিমিটার বাড়লে ১০ শতাংশ ও ৯৫ সেন্টিমিটার বাড়লে ১৫ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। উপকূলীয় এলাকার মধ্যে গোপালগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও ঝালকাঠির অরক্ষিত এলাকা বেশি মাত্রায় প্লাবিত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে উপকূলের ৫০ থেকে ৬৫ শতাংশ এলাকায় ১ থেকে ৫ পিপিটি লবণাক্ততা বাড়তে পারে। ৯৫ সেন্টিমিটার পানির উচ্চতা বাড়লে বরিশাল, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরে ১ পিপিটি লবণাক্ততা বাড়বে।
সিইজিআইএসের পরিচালক (পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ) মো. মোতালেব হোসেন সরকার বলেন, এই লবণাক্ততা বৃদ্ধি কৃষির ওপর প্রভাব ফেলবে। ৫০ থেকে ৯৫ সেন্টিমিটার পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার ফলে ৬ থেকে ৯ শতাংশের বেশি আমন ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। গঙ্গা অববাহিকার উপকূলীয় প্লাবনভূমিতে ১ থেকে ৫ পিপিটি লবণাক্ততা বাড়তে পারে। এসব এলাকার মানুষ সুপেয় পানির মারাত্মক সমস্যায় পড়তে পারেন।
বাংলাদেশ মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) দেশের মাটির অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ সালে দেশের ১৮টি জেলার ৯৩টি উপজেলায় লবণাক্ততা ছিল। ২০২৩ সালে আরও তিন উপজেলায় লবণাক্ততা বেড়েছে।
এসআরডিআইয়ের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জি এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপকূলে দিন দিন লবণাক্ততার পরিমাণ ও বিস্তৃতি দুই-ই বেড়ে যাচ্ছে।
করণীয় কী
পানিবিজ্ঞানী ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং মিঠাপানির উৎস কমে যাওয়ায় ভূ–উপরিস্থ এবং ভূগর্ভস্থ উভয় স্থানেই লবণাক্ততা বাড়ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধ করা আমাদের আয়ত্তের বাইরে। এর জন্য বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি দায়ী। তা নিয়ে আমরা বৈশ্বিক পর্যায়ে আরও সোচ্চার হতে পারি। তবে নিম্ন গাঙ্গেয় উপত্যকার দেশ হিসেবে আমাদের যতটুকু পানি প্রাপ্য, তার খুব কমই পাচ্ছি। লোনা পানির প্রবাহ রোধ হতো, যদি মিঠা পানির প্রবাহ ঠিক থাকত; কিন্তু সেটা হচ্ছে না। পানির ন্যায্যতা আনতে ভারত, চীন, নেপাল ও ভুটানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।’