অনলাইন ডেস্কঃখুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের প্রায় সাত লাখ নারী ও কিশোরীর জন্য জলবায়ু অভিযোজন ও সহিষ্ণুতা বাড়াতে ছয় বছরের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে এটি বাস্তবায়ন করবে। বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু তহবিল গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) আর্থিক সহায়তায় এ প্রকল্প চলবে।
রবিবার ‘উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবিলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পের অবহিতকরণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআআইএসএস) মিলনায়তন। এই প্রথমবারের মতো মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগ করছে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মন্ত্রণালয় সহ-অর্থায়ন করছে, যার বাকি অংশ অর্থায়ন করছে জিসিএফ।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে নারীদের ক্ষতি বেশি হয়। তাই তাদের সক্ষমতা বাড়াতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের চেঞ্জ এজেন্ট হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যা হবে দৃষ্টান্তমূলক । জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য নারীরা এখানে পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও পরিচালনা করবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, ‘কাউকে পেছনে না ফেলে, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । আর এই লক্ষে আমরা সরকার ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা যেমন জিসিএফের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। নারীরা যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে, তাই তাদের বাদ দিয়ে কোনোভাবেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।’ এই প্রকল্পের আওতায় খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের নারী ও কিশোরীদের জলবায়ুসহিষ্ণু জীবিকা অর্জনের জন্য সহায়তা দেওয়া হবে, পাশাপাশি নিরাপদ ও বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির জন্য কমিউনিটিভিত্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।
এই প্রকল্পের আরেকটি মূল বিষয় হলো, নারীদের অর্থনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত করা এবং বাজারে তাদের প্রবেশগম্যতা বৃদ্ধি করা। এছাড়া ব্যবসায়িক কাজে আরও উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাদের জন্য পাবলিক-প্রাইভেট উদ্যোগে স্থানীয় পর্যায়ে গড়ে তোলা হবে ব্যবসায়িক কর্মক্ষেত্র, যেখানে নারীরা তাদের উৎপাদিত পণ্য কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। তারা যেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহজে ঋণ পান সেই সুযোগও এই প্রকল্পের মাধ্যমে করে দেওয়া হবে ।