রাজধানীর গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী শুনানি শেষে জামিন আদেশ দেন।
এ নিয়ে চার মামলার মধ্যে চারটিতেই জামিন পেলেন হেলেনা। ফলে তার মুক্তিতে আর বাধা রইল না।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে মাদক ও প্রতারণার অভিযোগে করা পৃথক দুই মামলার জামিন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের করা মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত। এর আগে এই তিন মামলায় তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেছিলেন।
১৭ আগস্ট পল্লবী থানার পর্নোগ্রাফি আইনে করা মামলায় তার আইনজীবী জামিন আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান তার জামিন মঞ্জুর করেন।
তার আগে ১৮ আগস্ট তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাকে এ মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় হেলেনা জাহাঙ্গীর সেচ্চায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত ৩ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত পৃথক চার মামলায় শুনানি শেষে তার ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে তাকে হাজির করে পুলিশ। এর পর পল্লবী থানার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিন ও একই থানায় করা প্রতারণার মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চার দিন ও প্রতারণার মামলায় চার দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর পর গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে আবারও ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। এ ছাড়া গুলশান থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের আরেক মামলায় তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন দিন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৩০ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ শাহানুর রহমান। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তার আগে ২৯ জুলাই রাত ১২টার দিকে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসায় দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাব। তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু, বৈদেশিক মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।