ইতালি পাঠানোর স্বপ্ন দেখিয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন জান্নাতুল ফেরদাউস (২২)। এরপর মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। পরে জামিনে ছাড়া পেয়েই বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি ধমকি দেন জান্নাতুল।
অভিযোগে জানা গেছে, ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউসের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন সোহানা বেগম (২১)। সোহানা দশমিনা উপজেলার চরহোসনাবাদ এলাকার মো. মজিবুর রহমানের মেয়ে ও তেজগাঁও মহিলা কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্রী।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, লেখাপড়ার সুবাদে পরিচয় হয় ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার জাবেদ আলীর মেয়ে মোসা. জান্নাতুল ফেরদাউসের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরে দুজনের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে জান্নাতুল ফেরদাউস সোহানাকে ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে আট লাখ টাকা দাবি করেন। পরে পাঁচ লাখ টাকায় সোহানা বেগমকে ইতালি পাঠানোর জন্য সমঝোতা হয়।
সোহানার দরিদ্র বাবা মজিবুর রহমান জমি বিক্রি ও আত্মীয়স্বজনের কাছে ধারদেনা করে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দশমিনার বাড়িতে বসে আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে জান্নাতুল ফেরদাউসকে প্রদান করেন।
পরে জান্নাতুল ফেরদাউস সোহানার সঙ্গে টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায় জান্নাতুল ফেরদাউস টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন সোহানাকে। এ ঘটনায় সোহানা বেগম ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর দশমিনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. আশিকুর রহমান জান্নাতুল ফেরদাউসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ৯ জানুয়ারি জান্নাতুল ফেরদাউসকে গ্রেফতার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। ১৪ জানুয়ারি ওই মামলায় একই আদালত থেকে জামিন পান জান্নাতুল ফেরদাউস।
সোহানা বেগম জানান, জামিন পাওয়ার পর মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন জান্নাতুল ফেরদাউস ও তার চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় সোহানা দশমিনা থানায় বুধবার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
সোহানা বেগম জানান, বিদেশে মানুষ পাঠানোর নাম করে শত শত মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন জান্নাতুল ও তার চক্রের সদস্যরা।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত জান্নাতুল ফেরদাউসের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে দশমিনা থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেছেন, সোহানা আজ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।