জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবিতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনও দেশের প্রায় সর্বত্র পণ্য ও যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আজ (শনিবার, ৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিসগামী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। কিন্তু মিলছে না গণপরিবহন। যথারীতি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও রিকশা সকাল থেকে দখল করে নিয়েছে সড়ক। এ সব যানে ভাড়া বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুণ।
শুক্রবার সকালে শুরু হয় ধর্মঘট। এদিন সাপ্তাহিক ছুটি হলেও নানা কাজে অনেকেই বের হয়েছেন। তাদের পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। বিশেষ করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষার্থীরা পড়েন বিপাকে।
শনিবার রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় দেখা যায়, ট্রেন থেকে নেমেই বাড়ি ফিরতে গিয়ে পরিবহন সংকটে পড়েছেন অনেকে।
আগের দিনের মতো অনেকক্ষণ পরপর দুই-একটি বিআরটিসির দ্বিতল বাস এলেও হুড়মুড় করে সবাই ওঠার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কেউ কেউ ব্যর্থ হয়ে অপেক্ষা করছেন পরের গাড়ির জন্য।
বুধবার সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে পনেরো টাকা এবং বৃহস্পতিবার এলপি গ্যাসের দাম ১২ কেজির সিলিন্ডার প্রতি ৫৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।
তেলের দাম কোনো আলোচনা ছাড়াই একতরফা বাড়ানোর কারণে পরিবহন খরচ অনেক বাড়বে দাবি করে বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয় ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি।
কেন্দ্রীয়ভাবে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ধর্মঘটের কোন সিদ্ধান্ত না নিলেও জেলা পর্যায় থেকে মালিক শ্রমিকেরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ঢাকাগামী যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এ দিকে পরীক্ষার্থী ও জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার নিজ বাসভবনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, আগামী ৭ নভেম্বর রবিবার বিআরটিএ’র ভাড়া পুননির্ধারণ কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বাস্তবভিত্তিক মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যম জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে।
আরো বলেন, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা আজ থেকে পরিবহন ধর্মঘটের যে ডাক দিয়েছেন, তাতে পরীক্ষার্থী এবং জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।