নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উদযাপন করা হয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘মাটির পরিচর্যা : পরিমাপ, পরীক্ষণ, পরিচালন’। দিবসটি উপলক্ষ্যে বেলা ১১টায় সয়েল, ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।
এ সময় তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে মৃত্তিকা, পানি এবং পরিবেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে মাটির স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদনশীল মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই মাটিতে কোনো শস্য হবে না। এতে আমরাও ক্ষতির সম্মুখীন হবো। তাই টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মৃত্তিকা সম্পদকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
উপাচার্য বলেন, পৃথিবী প্রাকৃতিকভাবে পরিচালিত হয়। এটি রক্ষায় মানবজাতিরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। উদ্ভিদকূল ও প্রাণিকূল রক্ষায় সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে মানবজাতির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, লবণাক্ততার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্তসহিষ্ণু কয়েকটি ফসল ছাড়া অন্য কোনো ফসল উৎপাদন করা যায় না। এতে দীর্ঘমেয়াদি একটি ক্ষতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। এটি মোকাবেলায় টেকসই পরিকল্পনা প্রয়োজন।
ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর মো. সানাউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক মো. সাদিকুল আমিন। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দকে গাছের চারা উপহার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আর্টিকেল রাইটিং এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী সৌরভ দাস ও আশা আক্তার। এসময় ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০.৩০ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের অধিকাংশ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রায় মৃত্তিকা রক্ষায় বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রথম ২০১২ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল, ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালন করা হয়।