অনলাইন ডেস্কঃট্রানজিট সুবিধা ও পন্য আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে পূর্ণাঙ্গভাবে মোংলা বন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে নেপাল। ইতোমধ্যে বন্দরে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধা যাচাইয়ে গতকাল বুধবার মোংলা বন্দর পরিদর্শন করেছে নেপালের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত।বন্দরের পশুর নদী ও জেটি এলাকা পরিদর্শন শেষে বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মিঃ ধন বাহাদুর ওলি।
বেলা ১১টায় বন্দরের সভাকক্ষে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধা উপস্থাপন করেন মোংলা বন্দরের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার মোহাম্মদ সোহাগ। তিনি জানান, বন্দরে সুযোগ সুবিধা আর পরিধি বেড়ে যাওয়ায় এখন এ বন্দর একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। বাড়ছে দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন। ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো মোংলা বন্দর ব্যবহার করার ফলে বাড়ছে আমদানি-রপ্তানিও। তাই গেল অর্থ বছরে মোংলা বন্দরে ৯১২টি দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আগামন-নির্গমন এবং এখানে পণ্য খালাশ হয়েছে। আর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৭শ’ ২২ টিউজ।
তিনি বলেন, নৌ-পথে ট্রানজিট সুবিধার জন্য ব্যবহার করা যাবে মোংলা বন্দর। এ বন্দর থেকে খুলনা, এর পর রোহানপুর তার পর রেন্সাউল হয়ে পণ্য নেপালে প্রবেশ করবে। আর সড়ক পথে মোংলা বন্দর হয়ে খুলনা থেকে বাংলাবান্দা, তারপর সিলিগুড়ি দিয়ে কাকারভিটা হয়ে ট্রানজিট পণ্য বহন করা যাবে। স্টোরে এক সাথে মোংলা বন্দরে কার পার্কিংয়ের সুবিধা রয়েছে প্রায় দুই হাজার ৫শ’। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে চলমান রয়েছে আউটারবার ডেজিং কাজ, রেল প্রকল্প আর নতুন দু’টি জেঠি। এর সাথে যোগ হবে পদ্মা ব্রীজের সুবিধা। এর পর একে একে বন্দরের বিভিন্ন দপ্তর প্রধানগণ তাদের শাখায় কি কি সুযোগ সুবিধা নেপালী ব্যবসায়ীদের দেয়া সম্ভব হবে বক্তব্যের মাধ্যমে তা বুঝিয়ে দেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ধন বাহাদুরকে। এ সময় বন্দরের কর্মকর্তারা মোংলা বন্দরের বিদ্যমান সুবিধায় নেপালের ব্যবসায়ীদের মোংলা বন্দর ব্যবহার করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে।
গেল অর্থ বছরে ট্রানজিট সুবিধার মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে মোংলা বন্দর দিয়ে নেপাল ৬০ হাজার ৩শ’ মেঃ টন পণ্য কার্গো হ্যান্ডলিং করে এ দেশটি। নেপাল ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে মোংলা বন্দরে পণ্য আমদানি বাড়াতে চাইলে বন্দরের নিয়ম কানুন মেনে সকল সুবিধা নেপাকে দেয়ার আশ্বাস দেন মোংলা বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নেপাল এ্যাম্বাসির অফিস সেক্রেটারী রিনা ছেত্রী, বন্দরের পরিচালন প্রশাসন গিয়াস উদ্দিন, সচিব-ওহি উদ্দিন, হারবার মাস্টার দুরুল হুদা, মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নানসহ বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নেপালের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে মোংলা বন্দর দিয়ে কিছু পণ্য আমদানি করেছে নেপাল। ভবিষ্যতে বন্দরের ব্যবহার বাড়াতে নেপাল সরকারের দপ্তরে জানাবেন বলে জানান তিনি।