শেখ মাহতাব হোসেন:: প্রতি বছর রমজান মাস এলেই সাধারণ ক্রেতাদের দুর্ভোগ বহুগুনে বেড়ে যায়। ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত চত করতে নিত্যপন্যের মূল্য তালিকা টানানোর সরকারি বিধান রয়েছে। কিন্তু ডুমুরিয়া উপজেলার বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তা উপেক্ষিত। দোকানীরা নিজের খেয়াল-খুশিমত প্রতিযোগিতামূলক ভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। বর্তমান বাজার দর ও মূল্য তালিকা নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগেরও শেষ নেই।
নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে দামও বৃদ্ধি পায় এ রমজান মাসকে ঘিরেই। উপজেলা ১৪টি ইউনিয়নে বাজার গুলো সরেজমিন দেখা গেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই মূল্য তালিকা টানানো নেই। ডুমুরিয়া, চুকনগর, শাহাপুর, বাজার ঘুরে মাত্র কয়েকটি দোকানে মূল্য তালিকা দেখা গেছে। আবার অনেক স্থানে পণ্যর চার্ট থাকলেও দাম উল্লেখ নেই।
ডুমুরিয়া বাজারে আসা শেখ আমিনুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, মুদির দোকান থেকে শুরু করে মাছ, মাংসর কোন খানেই মূল্য তালিকা নেই। এ তালিকা থাকলে তো বেশি দামে বিক্রি করতে পারে না। সে জন্য দোকানীরা এগুলো টানিয়ে রাখে না। আর এগুলো যাদের (প্রশাসন
কিংবা ভোক্তা অধিকার) দেখভাল করার কথা, তারাও নিয়মিত তদারকি করেন না। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও মূল্য তালিকা টানানোর নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না। সবার আগে নিয়মিত বাজার মনিটারিং করতে হবে। তবেই নিত্যপন্যের দাম ঠিক থাকবে। আরও কয়েকজন ক্রেতা জানান, অনেক দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা থাকলেও সে অনুযায়ী দাম রাখা হয় না।
নাম প্রকাশ করা না স্বত্বেও ডুমুরিয়া বাজারের কয়েকজন মুদি দোকানী বলেন, মূল্য তালিকা আছে,তবে প্রতিদিন টানানো হয় না। বাজারে মোবাইল কোর্ট এলে বের করে সামনে রাখা হয়। তারা আরও বলেন, মূল্য তালিকা দিয়ে কি হবে? ক্রেতারা এগুলো দেখেন না। দাম লেখা থাকলেও দরদাম করেই পণ্য কেনেন। আমাদের ও দামাদামি করেই বিক্রি করতে হয়। যার জন্য মূল্য তালিকা টানানো হয় না।
জানা গেছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৩৮নং ধারা অনুযায়ী, দোকান বা প্রতিষ্ঠানে সহজে দেখা যায় বা বোঝা যায় এমন স্থানে মূল্য তালিকা টাঙানো না হলে বা প্রদর্শন করা না হলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদন্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থন্ড অথবা উভয় দন্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ বিধান শুধু কাগজে-কলমেই শোভা পাচ্ছে। বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। যার ফলে সঠিকভাবে অনেকেই মানছেন না নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শনীর সরকারি নিদের্শনা।
ডুমুরিয়া বাজার সমিতির নেতা বলেন, প্রত্যেক দোকানদারকে বাধ্যতামূলকভাবে মূল্য তালিকা টানাতে হবে। তা না হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আসাদুর রহমাননের নিকট এ সম্পর্কে জানতে গেলে তিনি বলেন, আপনি পড়ে আসেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, মূল্য তালিকা না থাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেক দোকানদারকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে শিগগরিই আবারও অভিযান চালানো হবে।