শেখ মাহতাব হোসেন:: খুলনার ডুমুরিয়ায় আবারও পেঁয়াজের দাম হু হু করে দাম বাড়ছে। গত ২/৩ দিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা। এখন ডুমুরিয়া বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে, যা ছিল ১০০ টাকা। আর গত এক ফেলেছেন। আর হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এ সময়ে চলছে সরবরাহ ঘাটতি। যে কারণে বাজারে দাম বাড়ছে। এদিকে সপ্তাহে বেড়েছে ৪০ টাকা। তার আগের সপ্তাহে কেজি ছিল ৮০ টাকার মধ্যে। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। বেশির ভাগ এলাকার কৃষকরা ওই পেঁয়াজ তুলে আমদানির সবচেয়ে বড় বাজার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। আমদানি না থাকায় কয়েক মাস ধরে আগাম জাতের এ পেঁয়াজ দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। ফলে দেশীয় এ পেঁয়াজের সরবরাহ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
অন্যান্য বছরের এ সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এখন পেঁয়াজের দর থাকার কথা ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। কিন্তু সে চিত্র এখন আর নেই। এত চড়া দামে পেঁয়াজ বিনতে বিরক্ত ক্রেতারা। ডুমুরিয়া বাজার কমিটি আহ্বায়ক শ্যামল দাস বলেন, গত বুধবার রাতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮২ টাকা। বৃহস্পতিবার সকালেই কেজিতে ১৫ টাকার মতো দর বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৯৩ থেকে ৯৭ টাকা পর্যন্ত। মূলত পাইকারি বাজারে দর বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। কিছু কিছু পাড়া মহল-ার দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতের রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ থাকলেও গত দুই মাসে চীন ও পাকিস্তান থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগন্য। ফলে তাতে বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।
ডুমুরিয়া বাজার কমিটি সদস্য সচিব খান মহিদুল ইসলাম জানান, ডলারের বাড়তি দামের কারণে অন্য দেশ থেকে আমদানি করলে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম পড়ে যায় ৭০ থেকে৮০টাকা। খুচরা বাজারে ফের পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু বাজারে কোনো সংকট নেই। পরিস্থিতি এমন, দুই দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০ টাকা বাড়িয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। আর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা। আর গত বছর একই সময় ৩০- ৪০ টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে।জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
রমজান মাসের চাহিদা বিবেচনায় ইতোমধ্যে কয়েকটি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে এর সুফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বাজার মনিটরিংয়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রভাবশালী মহলের চাপ নেই।