শেখ মাহতাব হোসেন :: ডুমুরিয়া ( খুলনা) দুর থেকে দেখলে মনে হয় থাইল্যন্ডের কোন ক্ষেতের পাশদিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকটি গিটে গিটে চিচিঙ্গা, মনে হচ্চে সৃষ্টিকর্তা তাঁর সবটুকু ভালবাসা দিয়ে ক্ষেতটি ভরে দিয়েছে। এক কথায় অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। একটি গাছে যে এত চিচিঙ্গা ধরতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা। যুগের পরিবর্তনের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি ও কৃষক। এবছর খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের কৃষক ইসলাম বিশ্বাস উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শ ও সহযোগিতায় প্রথম বারের মত চিয়াথাই কোম্পানির রানার জাতের চিচিঙ্গা চাষ করে অবিশ্বাস্য সফলতা পেয়েছেন। তার ১৮ শতাংশ জমিতে এ জাতের চিচিঙ্গা চাষ করে তিনি অত্যন্ত লাভবান হয়েছেন। জানতে চাইলে কৃষক ইসলাম বিশ্বাস এই প্রতিবেদককে বলেন ১০-১২ বছর ধরে আমি চিচিঙ্গা চাষ করছি। কিন্তু এত ফলন কখনও পায়নি, প্রত্যেকটি গিঁটে গিঁটে চিচিঙ্গা। ভাল ফলন পাওয়ায় আমরা খুব খুশি। আমি উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে প্রথম বারের মত বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময়ে চার হাত অন্তর অন্তর মাদা তৈরি করে খাট জাতের বরবটির মাঝে সাথী ফসল হিসাবে এজাতটি চাষ করি। আমার ১৮ শতক জমিতে সবমিলিয়ে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার টাকার চিচিঙ্গা বিক্রি করেছি , আরও ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রি হবে। বরাতিয়া গ্রামের কৃষাণী শাহিনুর বেগম জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে এবছর প্রথম বারের মত এজাতটি আমি লাগিয়েছি এবং আমার ২০ শতাংশ জমিতে ৮০০০/- টাকা খরচ করে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার কুশি বিক্রি করেছি এবং আশা করছি আরও ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব। ডুমুরিয়া ইউনিয়নের আইতলা গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, এটি খুব লাভজনক ফসল, পরিচর্যা কম করতে হয় এবং রোগ পোকামাকড়ের আক্রমণ ও কম। আমি এবছর ২ বিঘা ঘেরের পাড়ে ৪০,০০০ টাকা বিক্রি করেছি এবং আরও ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলা সবজির জন্য বিখ্যাত। আমি প্রতিনিয়ত কৃষকের পাশে থেকে আধুনিক ও উন্নত জাত ব্যবহার করে কিভাবে ফলন বৃদ্ধি করা যায় এবং কৃষিকে লাভজনক করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছি। এজন্য কৃষককে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির উপর নিয়মিত প্রশিক্ষন এবং মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। ডুমুরিয়ার কৃষিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।