মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ডুমুরিয়া মৎস্য খামারে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য খামারে মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্টের আওতায় ৫দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত প্রশিক্ষণে সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলা খামার ব্যবস্থাপনা মোঃ রাকিব হোসেন, ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য খামারে মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্টের ট্যাকনিক্যাল অফিসার প্রনব কুমার বিশ্বাস ও মোঃ আশিকুর রহমান প্রমুখ।
সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় ৫দিন ব্যাপীপ্রশিক্ষিন সম্পর্কে প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে চাষের মাধ্যমে ১ লাখ ৩৭ হাজার টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়েছে এবং চিংড়ি ও মৎস্যজাত দ্রব্য রপ্তানি করে প্রায় ৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়েছে। বর্তমানে দেশের প্রায় ২ লাখ ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। তবে এখনো দেশের প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ ঘেরে প্রচলিত সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষাবাদ হওয়ায় চিংড়ির গড় উৎপাদন খুবই কম (গলদা চিংড়ি ৭৫৬ কেজি এবং বাগদা চিংড়ি ৩৬৮ কেজি/হেক্টর)। সম্প্রতি মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট খুলনা অঞ্চলের ৫টি জেলার ৮ হাজার ৭৫০ জন প্রান্তিক চিংড়ি চাষিকে ৩৫০টি ক্লাস্টারে সংগঠিত করে তাদের মাধ্যমে উন্নত সনাতন পদ্ধতিতে ক্লাস্টারভিত্তিক চিংড়ি চাষ শুরু হয়েছে। প্রতিটি চিংড়ি ক্লাস্টার গড়ে ২৫ জন প্রান্তিক চাষির সমন্বয়ে গঠিত, যেখানে প্রতিটি ঘেরের গড় আয়তন ৫০ শতাংশ। ক্লাস্টারের অন্তর্ভুক্ত ঘেরগুলো একই ভৌগোলিক ও ইকোলজিক্যাল পরিবেশে খুব কাছাকাছি বা পাশাপাশি অবস্থিত। তারা একই উৎসের পিএল, পানি, খাদ্যসহ সব চাষ উপকরণ ব্যবহার করে একই উন্নত সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে সম্মত হয়েছে।
ক্লাস্টার চাষিদের যেসব বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন ক্লাস্টার এলাকায় চাষিদের পুকুর/ঘের (ব্যক্তিগত/যৌথ/লিজকৃত) থাকতে হবে; প্রতিটি ঘেরের আয়তন হবে ৩০-১৫০ শতাংশের মধ্যে এবং ঘেরের সঙ্গে পানির উৎসের (নদী/খাল) সংযোগ থাকতে হবে; ক্লাস্টারভুক্ত চাষিদের ঘেরগুলো পাশাপাশি অবস্থিত হতে হবে এবং ক্লাস্টারের সব চাষি একই চাষ প্রযুক্তি অনুসরণ করবে; ক্লাস্টারের অন্তর্ভুক্ত চাষিগণের ঘের/পুকুরের অবকাঠামো (মাটি কেটে ঘেরের গভীরতা বৃদ্ধি, পাড় মেরামত ইত্যাদি) উন্নয়ন এবং জৈব নিরাপত্তা বজায় রাখার সক্ষমতা থাকতে হবে; চাষির নিজস্ব বিনিয়োগের সামর্থ্য ও সদিচ্ছা থাকতে হবে; চাষিদের লিখতে- পড়তে পারার সক্ষমতা, সাধারণ হিসাব-নিকাশ ও তথ্য সংরক্ষণ করার দক্ষতা থাকতে হবে প্রতিটি ক্লাস্টারে কমপক্ষে ২০ শতাংশ মহিলা থাকতে হবে ক্লাস্টারের অন্তর্ভুক্ত চাষি ব্যাংক ঋণখেলাপি ও অবৈধ ভূমি দখলদার হতে পারবেন না; ক্লাস্টার গঠনে দরিদ্র/ মধ্যবিত্ত চাষিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে ক্লাস্টারের সদস্য/চাষিগণ একই ধরনের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান/সংস্থা/এনজিও কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকবেন না।