শেখ মাহতাব হোসেন:: শীত এলেই ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। পিঠা তৈরি ও বিক্রির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন রহিমা, রাসেল, আয়শাসহ আরও অনেকে। এরা বছরের অন্য সময় দিনমজুরের কাজ করেন আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ এক
সময় ছিলেন অবহেলিত কর্মহীন বেকার। শীত আসায় তাদের হাতে কাজ এসেছে। তারা এখন পিঠা তৈরির কারিগর। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে এবং উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও বড় বড় রাস্তার মোড়ে এমন পিঠা তৈরির দোকান চোখে পড়ার মতো। ভাপা, চিতই, সাতপুতি, তেলের পিঠা, চাপড়িসহ নানান স্বাদের পিঠা এখন হাতের কাছে মিলছে। বিকেল হলেই দোকানিরা তাদের পসরা সাজিয়ে বসছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা চুকনগর বাস স্ট্যান্ড মোড়, খর্নিয়া হাট, আঠারো মাইল স্ট্যান্ড, বাজার, শাহাপুর হাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে এখন রকমারি পিঠার দোকান পিঠাপ্রেমিদের আকৃষ্ট করছে।দিনক্ষণের গণনায় শীতকাল না এলেও সারা দেশে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে আগেই। বংশী নদীর অববাহিকায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া অঞ্চল তাই এ অঞ্চলে শীত নেমেছে।
সরেজমিনেম শনিবার বিকেলে বাজার ও উপজেলাবাস স্ট্যাড এলাকায় দেখা যায় ভাপাসহ হরেক পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। নানা পদের ভর্তায় ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠার স্বাদ নিতে ব্যস্ত পথচারী ও আশপাশের মানুষ। আর পিঠা বিক্রি করে আয়ের পথ সুগম হচ্ছে কিছু মানুষের এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম জানান, প্রতিদিন বিকেলে চিতই, ভাপা, চাপড়ি পিঠার সরঞ্জাম নিয়ে বসেন। সঙ্গে থাকে শুঁটকিভর্তা, কালোজিরা, ধনিয়া পাতা, সরিষাবাটা ভর্তা। কয়েক পদের ভর্তার সঙ্গে তার পিঠা ভালোই চলে। ডিম দিয়ে চিতই পিঠাও বিক্রি করেন তিনি।
রহিমা বেগম জানান, ধামরাই উপজেলা অফিস, মার্কেটের লোকজন ও ভূমি অফিসের মানুষ বিকেলে নাশতার জন্য এখানে এসে অনেকেই ভর্তা দিয়ে পিঠা খান। তাই ফুটপাত হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে তিনি নজর রাখেন। পিঠা বানিয়ে পরিস্কার পাত্রের মধ্যে রাখেন, ভর্তাও রাখেন ঢাকনাওয়ালা বাটিতে।প্রতিটি চিতই, ভাপা ও চাপড়ি পিঠা ১০ টাকা এবং ডিম চিতই একেকটি ৩০ টাকা রাখেন তিনি। তার কাজে সহায়তা করে তার বোন আয়েশা।
কেমন বিক্রি হয়, জানতে চাইলে এই দোকানি বলেন, প্রতিদিন সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা বিক্রি হয়। তাতে সব খরচ বাদ দিয়ে হাজার খানেক টাকা থাকে। ডুমুরিয়া স্ট্যান্ডে শীতের সময় চিতই পিঠা বিক্রি করেন রাসেল।
তিনি জানান, শুধু শীতকালই নয়, সারা বছরই প্রতিদিন দুপুরের পর পিঠা বিক্রি করেন তিনি। ডুমুরিয়া স্ট্যান্ডের আশেপাশের মানুষজন তার পিঠা কেনেন। অনেকে ৮ থেকে ১০টা করে বাসায় নিয়ে যান, পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে খান।প্রতিটি চিতই পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করেন রাসেল।
তিনি জানান, পিঠা তৈরির জন্য চালের গুঁড়াসহ আনুষঙ্গিক সব জিনিস জোগাড়ে তার স্ত্রী সহায়তা করেন। পিঠা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে।ফুটপাতের পিঠা বিক্রেতারা জানান, বেশিরভাগই মৌসুমি ব্যবসা হিসেবেই পিঠা বিক্রি করে থাকেন। শীতের তিন-চার মাস চলে পিঠার ব্যবসা। তারপর কেউ কেউ অন্য কাজে জড়িয়ে পড়েন।