শেখ মাহতাব হোসেন:: ডুমুরিয়ায় নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে খুলনার ডুমুরিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৯ নাম্বার (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার সাহস ইউনিয়নের দিঘুলিয়া পূর্ব পাশে বাঁধটি ভেঙে যায়। এতে কয়েক শ চিংড়ির ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।
ডুমুরিয়ার উপজেলার সাহস ইউপির দিঘলিয়া চটচটিয়া, গ্রামের পার্থ মণ্ডল ও বাপী মণ্ডল বলেন, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে দিঘলিয়া গ্রামে পাউবোর বেড়িবাঁধে ধস দেখা দেয়। এরপর সকাল ১০ দিকে স্থানীয় সাহস ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোল্লা মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন বাঁধটি রক্ষার জন্য কাজ শুরু করেন। তবে রাত ১০টার দিকে নদীর জোয়ারের তোড়ে বাঁধটি ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে।
খুলনার ডুমুরিয়া ২৯ নাম্বার পোল্ডারের বেড়ী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দিঘুলিয়া চটচটিয়া ও মাগুরখালী গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। সাহস ইউপির সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বাঁধটি ছিদ্র ছিল। রবিবার সন্ধ্যা থেকে বাঁধে ধস নামতে শুরু করে। সন্ধ্যার পর থেকে স্থানীয় সূত্র জানা যায় রাত ১০টার দিকে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি
ঢুকতে শুরু করে।
স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানকার মানুষের প্রধান পেশা চিংড়ি চাষ। মাস তিনেক আগে ধারদেনা করে এই এলাকার মানুষ ঘের প্রস্তুত করে চিংড়ি চাষ শুরু করেছিলেন। কোনো কোনো ঘেরমালিক সবে চিংড়ি বিক্রি শুরু করেছেন। এর মধ্যে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় অনেক চাষি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দ্রুত বাঁধ মেরামত না করা হলে ডুমুরিয়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের দুর্দশার শেষ থাকবে না বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাজকিয়া বলেন, সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বাঁধে ছিদ্র ছিল, তা এত দিন জানা যায়নি। রোববার ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করেন কর্মকর্তারা। জোয়ারের পানিতে সবজি ক্ষেত, মাছের খামার, আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন।
সাহস ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মাহাবুবুর রহমান বলেন, বর্তমানে ৫০ফুট ভেড়ী বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে হু হু করে পানি ঢুকছে। এরই মধ্যে চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আরও কয়েকটি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শতাধিক চিংড়ির ঘের পানিতে তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে।