শেখ মাহতাব হোসেন:: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় প্রথমবারের মতো ব্রকলির চাষ হয়েছে। রং ভিন্ন হলেও দেখতে যেন ফুলকপি। সবুজ রঙের এই সবজির পুষ্টিগুণ ফুলকপির চেয়েও বেশি। উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের মতিয়ার রহমান নামের এক কৃষক প্রথমবারের মতো এ সবজির আবাদ করেছেন।
এ বছর অনেক ফলন হয়েছে। নতুন জাতের এ সবজির কদরও রয়েছে বেশ। লোকজন উৎসাহ নিয়ে ব্রকলি কিনছেন। ফলন ও বাজারদর ভালো পাওয়ায় ব্রকলি চাষে হাসি ফুটেছে কৃষক জাকারিয়া ও মতিয়ার রহমানের মুখে। স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভ পাওয়ায় উপজেলার অন্য কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন এ জাতের সবজির আবাদ করতে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের উচ্চ মূল্যের ফসল আবাদে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উচ্চ মূল্যের ফসল-সবজি চাষাবাদে একদিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা মিটবে, অন্যদিকে কৃষকরা অল্প খরচে বেশি লাভবান হবেন।
এরই প্রেক্ষিতে উপজেলার বরাতিয়া ব্লকের গোবিন্দকাটি গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমানকে গত বছর উচ্চ মূল্যের ব্রকলি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। প্রথমবারের মতো তিনি এ সবজির চাষ করে বেশ ফলন পেয়েছিলেন। এ বছর তিনিসহ আরও কয়েকজন কৃষক ব্রকলি চাষ করেছেন।
বাজারে এর চাহিদা থাকায় দামও পাচ্ছেন বেশ। ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে, যা ফুলকপির চেয়েও বেশি। এই সবজিটিতে পানি বেশি থাকায় শীতে শরীরের জন্যও বেশ উপকারী।
ব্রকলি চাষি ডুমুরিয়া উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের মতিয়ার রহমান জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ বছর তিনি এবং একই গ্রামের জাকারিয়া মিলে ৪০ শতক জমিতে ব্রকলির চাষ করেছেন। ৩ (তিন) মাস সময়ে ব্রকলি পরিপক্ব হয়েছে। পুরো জমিতে প্রায় ৫ হাজার গাছ রয়েছে। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ব্রকলি বিক্রয় হয়েছে এবং খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা, লাভের পরিমান ১ লাখ টাকা।
ডুমুরিয়া বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা মো. আবদুল কদ্দুছ বলেন, প্রতি পিস ব্রকলি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে। বরাতিয়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেন, ব্রকলি এই এলাকায় নতুন চাষ হলেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ব্রকলি চাষ করে কৃষক বেশ লাভবান হবেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, উপজেলার বিভিন্ন ধরনের ফসলের উচ্চমূল্যের প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হয়েছে। তার মধ্যে ডুমুরিয়ার বরাতিয়া উচ্চমূল্যের প্রদর্শনীতে ব্রকলি চাষ করা হয়েছে। এ উপজেলায় ব্রকলি চাষ দিন দিন আরও সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করছি।