ডুমুরিয়া (খুলনা)সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে সরকারের একের পর এক উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখলেও ক্রমেই গতিহীন হয়ে পড়ছে মহাসড়ক। যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা আর মহাসড়কের জায়গা দখল করে ব্যবহারের ফলে দেশের প্রায় সব মহাসড়কেই লেগে থাকে যানজট। খুলনার ডুমুরিয়া ও এর ব্যতিক্রম নয়।
ডুমুরিয়ার বাসষ্টান মেইন পয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়া বাজার খলসির মোড় , খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ, ব্যস্ততম ও সুপরিচিত জায়গা । ডুমুরিয়া বাজার মোড়। ডুমুরিয়া মহিলা কলেজ মোড় থেকে ডুমুরিয়া হাসপাতাল মোড় পযন্ত এই রাস্তা দুই পাশ্বে অবৈধ ভাবে দখল করে আছে। দূরপাল্লার বাসসহ প্রতিদিনই প্রায় কয়েক হাজার মানুষের পদচারণা।
উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল এটি। তবে ঐতিহ্যবাহী এই মহাসড়কের দুপাশ অবৈধ দখলে নিয়ে বাজার তৈরি করে ব্যবসা করায় এখন তা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির স্থানে পরিণত হয়েছে। মহাসড়কের দু'পাশজুড়ে অবৈধ স্থাপনা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চরম আকার ধারণ করেছে। মহাসড়ক অবৈধভাবে দখলে নিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। প্রতিদিনই উঠছে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা।
ব্যস্ততম এই মহাসড়কে যানবাহন চলাচলসহ পথচারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। রাস্থার দু'পাশে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে হোটেল, বালু,খ,কাঠ,বাস দোকানসহ নানা ব্যবসা চলছে। ব্যবসার পাশাপাশি মহাসড়কে ইজিবাইক স্ট্যান্ড হওয়ায় পথচারিসহ শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। সর্বদাই যানজট লেগে থাকায় এখানে ইভটিজিংসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানির স্বীকার হচ্ছে স্কুল- কলেজগামী শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। এর আগে একাধিকবার মহাসড়কের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হলেও সরকারের আইন ভঙ্গ করে বারবার তোলা হচ্ছে দোকান। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ এই তীব্র যানজটের করল থেকে রক্ষা চায়। মানুষের একটাই দাবি দ্রুত যেন এ ব্যাপারে ব্যবস্থাপূর্বক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, চুকনগর পয়েন্টে মহাসড়কের দু'পাশে কোথাও খালি জায়গা নেই। সব জায়গাজুড়ে এখন অবৈধ স্থাপন করে রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে। উপজেলা পরিষদগামী হাজার হাজার মানুষ ও মহাসড়ক দিয়ে হাজারও যাত্রী নিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। আমাদের ভোগান্তি চরমে।
এখন সবসময় মনে ভয় থাকে; কখন জানি কোন দুর্ঘটনার স্বীকার হই। তাই প্রশাসনের কাছে জোর দাবি দ্রুত এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা পথচারী জয়দেব আচার্য বলেন, প্রতিদিন আমাদের এদিকেই চলাচল করতে হয়। সবসময়ই এখানে যানজট লেগে থাকে। এখানে সড়ক দুর্ঘটনাও বেশি হয়। যার ফলে প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।
বাসচালক মজনু মিয়া জানান, প্রতিদিনই এখানে ১০-১৫ মিনিট যানজটে আটকা থাকতে হয়। যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। এখানে রাস্তার মধ্যেই ইজিবাইক স্ট্যান্ড হওয়ায় সবসময় যানজট লেগে থাকে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার নূরুল ইসলাম মানিক বলেন, এখানে বড় ধরনের কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে। যারা সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই সিন্ডিকেট শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই এই অবস্থার উন্নতি হবে নতুবা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও এখানে অবৈধভাবে মহেন্দ্র স্ট্যান্ড তৈরি করে যত্রতত্র রাখায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় জনসাধারণকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছি। নির্দেশনা আসলে আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব।
এ ব্যাপারে খুলনা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। দ্রুত মহাসড়কে স্থাপিত এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।