খুলনার ডুমুরিয়ায় স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গৃহবধু নাসরিন । স্ত্রীর ঘরে তালা লাগিয়ে নতুন বউ ও মাকে নিয়ে উধাও নুর আলম নামের এক ভন্ড প্রতারক। সরেজমিন ও এলাকায় যেয়ে জানাযায়, ডুমুরিয়ার কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত রাজ আলী দফাদারের কন্যা নাসরিন খাতুনের সাথে ২০০৭ সালে ইসলামী শরিয়াত মোতাবেক কেশবপুর থানার মঙ্গলকোট গ্রামের মৃত মোশারফ মাস্টারের ছেলে নুরে আলম সবুজের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। তাদের ১৭ বছরের বিবাহ জীবনে তাদের কোলজুড়ে ৩টি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
নাসরিনের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিবাহের পর থেকে তার স্বামী নুরে আলম সবুজ বিভিন্ন বাহানা ও অজুহাতসহ ভয় ভিতি প্রদর্শন দেখিয়ে শশুর বাড়ির জমি বিক্রি করে ৮ লক্ষ টাকা তিন ধাপে স্বামী নুর আলম এনে দিই । নাসরিনের পরিবারের লোক আমাদের জানান, আমার বোনের সুখের জন্য আমরা জমি বিক্রি করে ভগ্নিপতি নুর আলমকে ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছি। এর পরেও আমার বোনকে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছে । আমার বোন ছাড়াও নুর আলম আরও ৫টি বিয়ে করেছে তা এলাকার মানুষ সব জানে। শুধু আমার বোন ও তার ৩ টি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের সুখের আশায় আমরা জমি বিক্রি করে ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছি। এতকিছু করার পরও আমার বোনের থাকার ঘরে ওরা তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমার ছোট ভাগ্নি, ওর মা ও নতুন বউকে নিয়ে গত বুধবারে ওরা ৪জন পালিয়ে গেছে। এদিকে আমার বোন নাসরিন বিভিন্ন দুয়ারে দুয়ারে না খেয়ে পাগলের মত গুরে বেড়াচ্ছে। তাদের কোন খোজ খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে এ ঘটনার পরও নাসরিন তার স্বামী নুর আলমের সাথে সতিনের সংসার করতে রাজি হয়। নাসরিন কাঁদতে কাঁদতে বলে আমি প্রথম স্ত্রী আমার ৩ টি সন্তান রেখে আমি কোথায় যাবো আমার মৃত্যু যেন এই ভিটে মাটিতে হয়। আমার স্বামী আমাকে বিভিন্ন অজুহাত ও বাহানায় আমাকে মারা ধরাসহ অমানবিক নির্যাতন করে তাও আমি এখানেই থাকব। এলাকাবাসি বলেন, লম্পট নুর আলম আসলে একটা পাক্কা বদমায়েশ ও একটা ভন্ড প্রকৃতির লোক। সে বিভিন্ন জেলায় ৫/ ৬ টি বিয়ে করেছে এবং তার নাসরিনের সংসার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে । একই সাথে তার উপরে পাশবিক ও শারিরীক নির্যাতনসহ মারধর করতে থাকে। বহু বিবাহের হোতা নুর আলম আসলে সে কি কাজ-কর্ম করে তা এলাকার কেউ বলতে পারিনি। এলাকার সবাই বলে নুর আলম ঘন ঘন বিয়ে করে বউ নিয়ে আসে কিছু দিন থাকে আবার সে বউ চলে যায়। এভাবে সে ৫/ ৬ টি বিয়ে করেছে সম্প্রতি সে বরিশালের ভোলা জেলায় এক মেয়ের সাথে সম্পর্ক করে বিয়ে করেছে। ঈদের পরে ওই বউ নিয়ে থানা পুলিশ করে বড় বউ নাসরিনকে নিয়ে ২ বউ নিয়ে ঘর সংসার করবে বলে থানা পুলিশের কাছে মুচলেকা দেয়। মুচলেকার ৭ দিন পর নাসরিন বাপের বাড়ি বেড়াতে গেলে নুর আলম ও তার মা এক জোট হয়ে নাসরিনের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে উধাও হয়ে যায়।
এদিকে প্রথম স্ত্রীর থাকার ঘরে তালাবন্ধ করে রেখে অন্য এক মহিলার হাত ধরে নিরুদ্দেশের পথে পাড়ি জমিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে । অনেকে আবার বলে ঢাকায় থাকে শুনেছি কনো এক মাদ্রাসায় কি কাজ করে সে। প্রথম স্ত্রী আরো অভিযোগ করে বলেন, লম্পট যৌতুক লোভি সবুজ ১ সপ্তাহ, ১৫ দিন, ১ মাস পর পর সে বাসায় আসে। আবার ১-২ দিন থেকে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ডিম বিক্রি করে যা জমা করতাম তা আমার কাছ থেকে জোর করে নিয়ে নিতো। ব্যবসা করার কথা বলে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে যেতে বাধ্য করত।
আমি তাকে টাকা এনে দিতে রাজি না হলে আমাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন এবং ঠিকমত খেতে দিতনা।
কাপড় পরতে দেয়নি এমনি অসুস্থতায় চিকিৎসা করায় নি। আমার শারীরিক অবস্থা মঠেও ভাল নেই । আমার তিনটি সন্তানকে বুকে আগলে রেখে কোনোভাবে ঠিকে ছিলাম তার ভিটায়। একটু ভাল থাকার জন্য বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে দিয়েও এতো কষ্ট করে থাকার পরও কিন্ত এখন আর সেটুকুও থাকছে না আমার। আমাকে সে তালাক পাঠিয়েছে পিয়নের মাধ্যমে। আমি কোন কাগজ নেয়নি সহি করিনি।আমার সন্তানদের আমার কাছ থেকে নিয়ে আমার থাকার ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কোথায় চলে গেছে। আর তার এই কাজে সহযোগিতা করেছে আমার শাশুড়ি, আমার এক জা ও ভাশুর। কথায় কথায় তারা এক হয়ে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে। আমার এলাকার সবাই জানে আমি কেমন। আমি ১৭ বছর ঘর সংসার করছি। সর্বাপরি এলাকাবাসী, মোড়ল মাতুব্বর,চেয়ারম্যান, মেম্বার, প্রশাসনসহ উর্ধাতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমি যেনো সঠিক বিচার পায় এবং ৩ সন্তানকে নিয়ে থাকতে পারি আপনারা একটু সেই ব্যবস্থা করেদেন।