দুনিয়ার মজদুর এক হও। বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষক নেতা শহীদ কমরেড শেখ আব্দুল মজিদ এর ৩৩তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ডুমুরিয়া শহীদ কমরেড শেখ আব্দুল মজিদ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বিকাল ৬টার সময় অনুষ্ঠিতহয়।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মজিদের বড় ছেলে শেখ সেলিম আক্তার স্বপন, দোয়া পাঠ করেন খুলশী ক্যাডেট স্কুম মাদ্রাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা মুজিবুর রহমান, অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী মোল্লা, বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন, আলহাজ্ব বদরুজ্জান, ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের সাবেকভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রন্জন কুমার তরফদার, শেখ মোফাজ্জল হোসেন, ডুমুরিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সংগঠক শেখ আমজাদ হোসেন দাদা ভাই, দৈনিক অবজারভার ভোরের কাগজ ও দৈনিক জন্মভূমি ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি শেখ মাহতাব হোসেন, এলারা মজিদ পপি, ডুমুরিয় বাজার কমিটির আহ্বায়ক মহিদুল ইসলাম, সদস্য সচিব শ্যামল দাস, ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু, গৌতম কুমার কুন্ডু, অনুষ্ঠান সার্বিক সঞ্চালনা করেন শেখ মোশারফ হোসেন।
দক্ষিণ বাংলার প্রখ্যাত কৃষক নেতা আজীবন সংগ্রামী মজিদ মাষ্টারের ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী । ১৯৮৯ সালে ২ রা জুন এই দিনে খুলনা জেলার প্রখ্যাত এই কৃষক নেতা দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন।
শেখ আব্দুল মজিদ ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার খলশী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী শেখ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে বিএল কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। কর্মজীবনে তিনি রঘুনাথপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
তিনি পুর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির খুলনা জেলা সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ডুমুরিয়া থানা উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
মূলতঃ কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্বদান এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পাকবাহিনী, স্থানীয় রাজাকার, শান্তি বাহিনী, লুটেরা, জোতদার কর্তৃক হত্যা, নির্যাতন ও লুটপাটের ফলে দিশেহারা মানুষ; বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি ও তাঁর সহযোগীরা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলে খুলনার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীকালে খুলনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষের পাশে থেকে বিশেষ করে; কৃষক, শ্রমিক ও গরীব অসহায় মানুষের স্বার্থ রক্ষায় তিনি সারাজীবন আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। তিনি জাতীয় পর্যায়ে নেতাদের কাছে মজিদ মাষ্টার এবং স্হানীয় মানুষের কাছে মজিদ সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন এবং স্বাধীনতা পরবর্তী আশির দশক পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ডুমুরিয়া থানার পরিচিতি অনেকটা যার নামের সাথে জড়িয়ে গিয়েছিল সে ছিলো লাল ডুমুরিয়ার মজিদ সাহেব।
আজীবন সংগ্রামী এ নেতা সবসময় অন্যায়ের বিরোধিতা করেছেন। দরিদ্র সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন।শহিদ কৃষক নেতা শেখ আব্দুল মজিদ সাহেবের মৃত্যু বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা এবং তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছেন।