খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় সরকারিভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সারা দেশে ২২ হাজার ২ শত মৎস্য চাষিকে মাছ চাষের প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী চাষির মাছ সরকারিভাবে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে আধুনিক প্রযুক্তি সহজেই অন্য চাষিরা গ্রহণ করতে পারেন।
এই পদ্ধতিতে চাষকৃত মাছের মধ্যে রয়েছে টেংরা, পাবদা, গুলসা, শিং, মাগুর, চিতল। এছাড়াও কার্প, মিশ্র কার্প গলদা ও পাঙ্গাশ মাছের প্রদর্শনী কার্যক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হয় ।
শনিবার এই প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন চিত্র পরিদর্শনে আসেন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মাদ হাবিবুবুর রহমান।
তিনি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের কাজীরহুলা এলাকায় টেংরা মাছ চাষ প্রদশর্নী পরিদর্শন করেন। এ সময়ে তিনি স্থানীয় মৎস্যচাষীদের সাথে কথা বলেন। ডুমুরিয়া উপজেলার মৎষ্য চাষীদের সফলতার কাহিনী শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় মৎস্য চাষীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রকল্প’ ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২০ সালের জুন মাসে মেয়াদে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারনৈ এর মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়ানো হয়। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২৪২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়ে দাড়ায় ৩৯৫ কোটি ৯৭ লাখ।
ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষিদের সঙ্গে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে লিফ (স্থানীয় মৎস্য সম্প্রসারণ প্রতিনিধি) মনোনয়ন করা হয়েছে, যারা সার্বক্ষণিক স্থানীয়ভাবে মৎস্যসেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এ প্রকল্পে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ মানুষের আয় বৃদ্ধি ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সারা দেশে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বক্কার সিদ্দীক জানান ইউনিয়ন পর্যায়ে দেশীয় মৎস্য চাষ প্রকল্পটি মানুষের আয় বৃদ্ধি এবং বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, এই প্রকল্পে একদিকে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা চলমান প্রকল্পের ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।
সারাদেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। প্রকল্পের সময় ও আওতা বাড়িয়ে নতুন উদ্যাগ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলীয় অঞ্চলে বিলুপ্ত প্রায় মাছের চাষ সম্প্রসারণের লক্ষে এ প্রকল্প বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।