বুধবার সকাল ১০টার সময় ডুমুরিয়া উপজেলা কমরেড শহীদ শেখ আব্দুল মজিদ মিলনায়তনে উপজেলা পানি কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মাদ আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এ বি এম শফিকুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পানি কমিটির বিশেষঅজ্ঞ প্রফেসর মোঃ হাশেম আলী, বক্তব্য রাখেন তালা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ সেলিম আক্তার স্বপন, উপজেলা পানি কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক জি এমন আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক মোঃ মোশারফ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক শেখ মাহতাব হোসেন, সদস্য বিজলি মন্ডল,বুলু চক্রবর্তী ,লাভলি খাতুন, জি, এম, আমানুল্লাহ , প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সার্বিক সঞ্চালন করেন দিলিপ কুমার সানা। পানি কমিটি একটি নাগরিক কমিটি। বিগত শতাব্দীর আশির দশকে গঠিত পানি কমিটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সচেতন নাগরিক সমাজের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে। পানি কমিটি এ অঞ্চলের সমগ্র জলাভূমি এলাকা বিশেষ করে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোর জেলার নিম্নাংশ অর্থাৎ উপকূলীয় এ এলাকার জলাভূমি তথা পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। এ লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ধরে এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠির সক্ষমতা বিকাশে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা, বিশেষভাবে জলাবদ্ধতা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত, সুন্দরবন রক্ষাসহ পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাশ্রম অব্যাহত রেখেছে। পানি কমিটির উল্লেখযোগ্য প্রথম সফলতার মধ্যে রয়েছে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের আঠারো মাইল অংশে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ জলাবদ্ধতা নিরসন। সহিংসতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সংঘাত-সংঘর্ষ ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে পানি নিষ্কাশন করার মাধ্যমে জলাবদ্ধ এলাকার পানি নিষ্কাশনে গঠিত কমিটি পরবর্তীতে পানি কমিটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যার সভাপতি হিসেবে চুকনগর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম ও সদস্য সচিব হিসেবে উত্তরণ দায়িত্ব পালন করছে। পানি কমিটি উপকূলীয় ১১টি উপজেলা যথা: তালা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর,
কালীগঞ্জ, দেবহাটা, আশাশুনি, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা, মনিরামপুর ও ৪টি নদী যথা: কপোতাক্ষ, শালতা, বেতনা ও হরি অববাহিকায় কমিটি গঠন এবং উক্ত কমিটিগুলোর সমন্বয়ে ১টি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পানি কমিটি দীর্ঘ সময় ধরে দক্ষতার সাথে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে। উপকূলীয় এ অঞ্চলের নদ-নদী রক্ষায় জনগণ উদ্ভাবিত অবাধ জোয়ারভাটা (Tidal River Management- TRM) বাস্তবায়নে ন্যায় সংগত দাবী, দাবীর পক্ষে জনমত সৃষ্টি ও সরকারের স্বীকৃতি প্রদানে পানি কমিটির ভূমিকা অপরিসীম। উপকূলীয় জনপদ রক্ষায় নদী অববাহিকায় টিআরএম পদ্ধতিকে অন্তর্ভূক্ত করে প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়নে Asian Development Bank-ADB প্রধানের সাথে বৈঠক, এডিবি প্রধান কর্তৃক সরকারের টিআরএম কার্যক্রমের উপর সমীক্ষার পরামর্শ প্রদান, সমীক্ষা বাস্তবায়নে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএসকে দিয়ে পরিচালিত সমীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকারের টিআরএম কার্যক্রম গ্রহন করা এবং তা বাস্তবায়নে হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায় প্রকাশ পানি কমিটির এক অনন্য সফলতা।
উল্লেখ্য, সিইজিআইএস পরিচালিত সমীক্ষা প্রতিবেদনে টিআরএম পদ্ধতিকে বলা হয়েছে, “টিআরএম প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বাস্তবায়ন যোগ্য, আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব এবং সামাজিকভাবে উচ্চমাত্রায় গ্রহণযোগ্য” ।