খুলনার ডুমুরিয়ায় সুদে মহাজনদের চাপে ও স্ত্রীর অপমান সইতে না পেরে গোবিন্দ কুমার রায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে তিনি ওই সুদে মহাজনদের চাপের ইতিহাস তুলে ধরে ৩ পাতার একটি চিরকুট লিখে রেখে গেছেন।
রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকার মৃত নিরঞ্জন রায়ের ছেলে গোবিন্দ কুমার রায় নিজ ঝর্না মেডিকেল হলের মালিক। স্ত্রী প্রীতিলতা থুকড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল পরিবারটির। গোবিন্দর স্ত্রী প্রীতিলতা ও বড় ভাই মলয় কুমার রায় বলেন, নিজ ঘর নির্মাণের জন্য নগদ টাকার প্রয়োজনে গোবিন্দ জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় সুদে মহাজন শিবু জোয়াদ্দার, সুকৃতি মন্ডল, কল্লল মন্ডলসহ কয়েক জন সুদে মহাজনের সাথে। এরই মধ্যে সুদের টাকা দিতে দেরি হওয়ায় হঠাৎ তার উপর নেমে আসে অমানুষিক চাপ। একপর্যায়ে পালাতে বাধ্য হন তিনি।
এরপরও গত শনিবার স্ত্রী প্রীতিলতাকে চাপের মুখে ফেলে ৫ লাখ টাকার চেকে সই করিয়ে নেয়া হয় এবং হুমকি দিয়ে বলা হয় এলাকায় বসবাস করতে হলে আগে সুদের টাকা পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় এলাকা ছাড়তে হবে। বিষয়টি জানার পর মানুষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। চাপ সইতে না পেরে ঘটনার দিন দুপুরে স্থানীয় রামকৃষ্ণপুর মহা-শ্বশানের পাশে থাকা একটি গাছের ডালে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় সে। তার আত্মহত্যার জন্য ওই সুদে মহাজনরাই দায়ি বলে দাবি করেন পরিবারটি।
এ ঘটনায় আত্মহত্যার সাথে জড়িত সুদে মহাজনদের বিচারের দাবিতে নিহতের বড় ভাই মলয় কুমার রায় বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।