উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হই। পরে ২০১৯ সালে প্রথম মাল্টা গাছ লাগানোর বছরেই ফল ধরে গাছে।
বর্তমানে আমার ১০০ গাছ রয়েছে। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। গত সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করেছিলাম। এ বছর গড়ে ৫০ টাকা কেজি দরে যদি মাল্টা বিক্রি করতে পারি তাহলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হবে।
সোমবার (২ আগস্ট) সকালে খুলনার ডুমুরিয়া সদরের গোলনা গ্রামের ইমরান খান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগে এ জমিতে ধান লাগানো হতো। এরপর বড়ই গাছ লাগাই। বড়ইয়ের পর পেয়ারা ও মাল্টা গাছ রয়েছে। ২০ মণ ধান হলে ২০ হাজার টাকা পেতাম। খরচ যা হতো তার থেকে অর্ধেক আয় হতো। সেখানে মাল্টা চাষে অনেক লাভ। ইমরান বলেন, সফলভাবে সুস্বাদু মিষ্টি ও রসালো মাল্টা চাষ করায় রীতিমতো এলাকায় হৈ চৈ পড়ে গেছে। সবার দৃষ্টি এখন মাল্টা বাগানের দিকে। অনেকেই মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন।
আরশনগরের হোসেন সরদার নামের অপর এক মাল্টা চাষি বলেন, তিন বছর আগে আমার এক আত্মীয়ের পরামর্শে মাল্টা চাষ শুরু করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি। আগামীতে তিন লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো।
সফল এ মাল্টা চাষি বলেন, আমাকে দেখে গ্রামের অনেকে মাল্টা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
করোনাকালে তাজা, বিষমুক্ত, সুমিষ্ট লেবু জাতীয় সবুজ মাল্টার কদর রয়েছে খুলনার বাজারে। বিদেশ থেকে আনা কমলা, মাল্টা, আপেল, নাশপতি ও ডালিমের সঙ্গে বেশ পাল্লা দিয়েই চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতা-দোকানির কাছে আমদানি করা হলুদ রঙের চেয়ে সবুজ মাল্টার কদর বেশি।
ইমরান খানের দেখাদেখি তার চাচাতো মোক্তাদির খান শিক্ষাকতার পাশাপাশি তার বাড়ির ছাদে মাল্টা চাষ শুরু করেন।
তিনি বলেন, আমি প্রথমে ১০টি গাছ দিয়ে শুরু করি। প্রথম বছর ফল কম ধরলেও পরের বছর থেকে অনেক ভাল ফল পাচ্ছি। । এখন আমি আরো দশ শতক জমিতে এই মাল্টা চাষ করছি। এবং আশাকরি সামনে ভাল ফল পাবো।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলায় এখন থেকে ৩-৪ বছর আগে কোনো বাণিজ্যিক মাল্টা বাগান ছিল না। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বর্তমানে ডুমুরিয়াতে ৭ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টার চাষ হচ্ছে। প্রায় ৫০-৬০ জন কৃষক মাল্টা চাষের সঙ্গে জড়িত। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরে। অধিকাংশই বারি মাল্টা-১ বা পয়সা মাল্টা। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলার গোলনা গ্রামের দু’জন তরুণ কৃষক ইমরান খান ও ইমন খান ৪০ শতাংশ জমিতে মাল্টা গাছ লাগিয়েছে। গাছের বয়স দুই বছর, প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে ২৫-৩০ কেজি মাল্টা। প্রতি কেজি মাল্টার বর্তমান বাজার মূল্য ৭০-৮০ টাকা।
তিনি জানান, একবিঘা জমিতে ১০০ মাল্টা গাছ রয়েছে এবং লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। এছাড়াও টিপনার শেখ মঞ্জুরের তিন বিঘা জমিতে প্রচুর মাল্টা ধরছে। তিনি চার লাখ টাকা আশা করছেন। এছাড়া আরশনগরের হোসেন সরদারের এক মাল্টা বাগানে মাল্টার ভারে গাছ নুয়ে পড়ছে।