শেখ মাহতাব হোসেন: খুলনার ডুমুরিয়ায় সরকার মেয়াদকালের শেষপর্যায়ে চলে এসেছে। অথচ এ সময়েও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অন্যতম কর্মসূচি ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ বাস্তবায়ন হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাবতে ভাবতেই প্রথম দুই বছর কেটে গেছে। এরপর সমীক্ষা প্রকল্প নিয়ে কেটে গেছে আড়াই বছর। বাকি ছয় মাসে প্রকল্প অনুমোদন হলেও কাজ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ২১ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা সারা দেশে ১৫টি গ্রামকে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’-এ মডেল করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেই উদ্যোগ শুধু প্রকল্প প্রস্তাব পর্যন্ত এগিয়েছে। বাকি সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) এবং ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এ সরকারের মেয়াদে গ্রামপর্যায়ে নাগরিক সুবিধা সৃষ্টিতে ২৯০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ-সংক্রান্ত কাজগুলো অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সেখান থেকে আমরা ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করে তার আলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। এ সরকারের মেয়াদে করোনাসহ বৈশিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে এগোতে হচ্ছে। এজন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সবকিছু প্রত্যাশার আলোকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
তবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, প্রয়োজন ছিল আদর্শ গ্রাম, উপজেলা বা গ্রামীণ জনপদের পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিকল্পনাবিদদের সম্পৃক্ত করা। এটা করার জন্য বাংলাদেশে সক্ষম কোনো সংস্থা নেই। শুরুতে স্থানীয় সরকারের আওতায় একটি স্বতন্ত্র পরিকল্পনা সংস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন ছিল। এরপর ওই পরিকল্পনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) দিয়ে বাস্তবায়ন করা যেত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন তারা বাস্তবায়নকারী সংস্থা এলজিইডিকে পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। যেই সংস্থায় একজন পরিকল্পনাবিদও নেই। পেশাগত অপারগতার কারণে পরামর্শক দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতেই সরকারের মেয়াদ শেষ।