চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃস্ত্রীর অধিকারের পাশাপাশি ভূমিষ্ঠ সন্তানের স্বীকৃতি পেতে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশের কুমিল্লায় এসেছেন নাদিয়া (২৯) নামে এক তরুণী। সঙ্গে রয়েছে তিন বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান।জানা যায়, গত তিন দিন আগে সুদূর ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশে অবতরণ করেন ওই নারী। এরপর স্ত্রী ও সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে অবস্থান নেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার আশারকোটা গ্রামে মফিজ মেম্বারের বাড়িতে।এক সন্তানের জননী নাদিয়ার দাবি, ওই গ্রামের মফিজ মেম্বারের ছেলে সাইফ তার স্বামী। এমন দাবির পরপরই নাদিয়াকে প্রতারক আখ্যা দিয়ে মারধর করেন সাইফের বাড়ির লোকজন।
ডেনমার্কের নাগরিক নাদিয়া জানান, প্রায় ১০ বছর আগে আশারকোটা গ্রামের মফিজ মেম্বারের ছেলে সাইফ তাকে বিয়ে করে। এরপর তাদের সংসারে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। তার অভিযোগ, দীর্ঘ ১০ বছরের সংসার জীবনে নাদিয়ার পরিবার ও তার চাকরির বেতনের প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অভিযুক্ত সাইফ। এমনকি সম্প্রতি ডেনমার্ক থেকে দেশে আসার কথা বলে নাদিয়ার কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার ইউরো হাতিয়ে নিয়েছে সে। গত তিন মাস পূর্বে বাংলাদেশে আসে সাইফ। দেশে আসার পরপরই সে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, এমনটাই অভিযোগ নাদিয়ার।
এ দিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে আসার পরপরই সাইফ কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকার অনার্স পড়ুয়া এক মেয়েকে ডেনমার্কে নিয়ে যাবে বলে কৌশলে বিয়ে করেন। এরই মধ্যে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে ডেনমার্কের ওই নারীকে গ্রামের বাড়ি থেকে কৌশলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার ‘হোটেল নূরজাহানে’ নিয়ে যায় সাইফের লোকজন। পরবর্তীকালে সেখান থেকে আবারও কুমিল্লা নগরীর রেসকোর্স এলাকার ‘হোটেল রেডরোফে’ নেওয়া হয়।
এই হোটেলে অবস্থানকালে নাদিয়া জানান, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে পুনরায় ডেনমার্কে চলে গেছে সাইফ। এরপর সেখান থেকে ফোন করে সে আমাকে চলে যেতে বলে। তাই এখন আর বাংলাদেশে থেকে আমার কী লাভ।
এ দিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান এবং নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নাদিয়া। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় নাঙ্গলকোট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নাদিয়া।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফ এবং তার পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ দিকে, বুধবার (২৭ নভেম্বর) অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে নাদিয়ার জিডির সত্যতা স্বীকার করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান জানান, মঙ্গলবার রাত ৩টার ফ্লাইটে পুনরায় নিজ দেশ ডেনমার্ক চলে গেছেন নাদিয়া। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে তাকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বামীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও দিয়েছেন নাদিয়া। তার এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে বলেও উল্লেখ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।