অনলাইন ডেস্কঃচলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ৫ হাজার ২৩৯ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে ঢাকার চারপাশে নদীর তীরভূমির প্রায় ১৪৫ দশমিক ১ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।বুধবার (২৪ জুলাই) সচিবালয়ে নদীর নাব্যতা ও স্বাভাবিক গতি প্রবাহ অব্যাহত রাখা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় এ তথ্য জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী টাস্কফোর্সের সভায় সভাপতিত্ব করেন।সভায় জানানো হয় যে, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর উচ্ছেদকৃত তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১০ হাজার ৮২০টি সীমানা পিলার, বনায়ন, তিনটি ইকোপার্ক, ছয়টি পন্টুন, ৪০ কিলোমিটার কি-ওয়াল, ১৯টি আরসিসি জেটি, ৪০ টি স্পার্ড ও ৪০৯টি বসার বেঞ্চ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে।এ সময় নিলামের মাধ্যমে আট কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪০০ টাকা এবং জরিমানার মাধ্যমে ২৭ লাখ ৬ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১০-২০১৯ সাল পর্যন্ত নদীর তীরের সীমানা চিহ্নিত করতে ৯ হাজার ৫৭৭টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৮৫৫ পিলার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত দুই হাজার ১১৪টি পিলারের নিষ্পত্তি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬১২ দশমিক ২২ একর জমি উদ্ধার করেছে। এরমধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩৭৮ দশমিক ৬২ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ২৩৩ দশমিক ৬০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১৫ হাজার ৫৯২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২ হাজার ৪৭৮টি এবং নারায়ণগঞ্জে ৩ হাজার ১১৪টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।বিআইডব্লিউটিএর নদী তীরে চলমান উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে টাস্কফোর্স। উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানিয়েছে টাস্কফোর্স।নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নির্দেশে নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে টাস্কফোর্স কার্যক্রম ভূমিকা রাখবে। উচ্ছেদ কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তার জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।সারা দেশের অভ্যন্তরীণ নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে সাতটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশের নদী খনন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। খাগদোন, বিষখালী, কীর্তনখোলা, যাদুকাটা, রক্তি, রকশোনালা, কর্ণপাড়াখাল, লোহালিয়া, মনু, পিয়ান,আড়িয়াল খাঁ, ইছামতি, তালতলাখাল, পালং, নড়িয়াখাল, পুরাতন দুবালদিয়া, শীতলক্ষ্যা, কালিগঙ্গা, শৈদাহ, গাঘর, মধুমতি, কাচিকাটাখাল, পাড়কোনা, তুরাগ, কুমার,ধলেশ্বরী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, তিতাস নদী, কংস, বাউলাই, সুরমা, মগড়া, পাগলা, বুড়ি, ভোগাই-কংস, নতুনডাকাতিয়া, বাঁকখালী, ভৈরব, আত্রাই, ভোলা, পালরদি, কর্ণতলী, পদ্মা, মেঘনা, গাবখানখাল, কর্ণফুলীনদীচ্যানেল, পশুর নদীচ্যানেল, কাজল-তেতুলিয়া নদীতে খনন কাজ চলমান রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।