সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বাড়াতে ও পথচারীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে রাস্তা পারাপারের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নতুন করে ৩৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ৮টিতে সচল সিঁড়ি স্থাপন করা হবে।
এছাড় বিদ্যমান ৪৭টি ফুটওভার ব্রিজের উন্নয়ন করা হবে। মূলত ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার আকর্ষণীয় করতেই ৮টি ফুটওভার ব্রিজে ১৬টি এস্কেলেটর বা সচল সিঁড়ি স্থাপন করবে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসির প্রধান সড়কগুলোতে যাত্রীদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ৫০টি নতুন ছাউনি নির্মাণ করা হবে। সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা বৃদ্ধি এবং পথচারীদের নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে ৭ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সড়ক মিডিয়ান উন্নয়ন করা হবে। সড়ক মিডিয়ান ও ফুটপাতের সাইডে ৪৫টি গ্রিলের বেড়া দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটিতে আমরা নতুন করে ৩৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করবো। পথচারীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ৮টিতে চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন করা হবে। যেমন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও হার্টফাউন্ডেশনের সামনে চলন্ত সিঁড়ি বসিয়ে দেবো। ফলে ফুটওভার ব্রিজের পাশে দাঁড়ালেই যাত্রীরা পারাপার হতে পারবেন। এছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে ৫০টি যাত্রী ছাউনিও নির্মাণ করে দেবো।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, জনবহুল এলাকা বিবেচনা করে ৮টি ফুটওভার ব্রিজে ২টি করে মোট ১৬টি এস্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) স্থাপন করা হবে।
স্থানগুলো হলো- কাকলী, শাহীন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, সিএমএইচ হাসপাতাল, শ্যামলী ইন্টারসেকশন, মহাখালী ফুটওভার ব্রিজ অঞ্চল-৩ ও প্রগতি সরণি ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ফুটওভার ব্রিজে দু’টি করে মোট ১৬টি চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন করা হবে।
পথচারী, ট্রাফিক সমীক্ষা প্রতিবেদন এবং স্থানীয় জনসাধারণের চাহিদার আলোকে ফুটওভার ব্রিজে এস্কেলেটর স্থাপনের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।
ডিএনসিসির আওতাধীন ১৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৯ কিলোমিটার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এবং সাড়ে ২৬ কিলোমিটার ফুটপাত উন্নয়ন করা হবে। ‘ডিএনসিসি এলাকার ট্রাফিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৩১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি সময় থেকে ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।
স্থানগুলো হলো- কুড়িল চৌরাস্তা, মাস্টার মাইন্ড স্কুল, গাউছুল আজম অ্যাভিনিউ, লুবানা হাসপাতাল, গরিবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউ, গাউছুল আজম আজম অ্যাভিনিউজ পূর্ব, মাইলস্টোন কলেজ উত্তরা, বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ সিরামিক রোড, প্রশিকা ক্রসিং মিল্ক ভিটা রোড, শিয়ালবাড়ী মোড়, মিরপুর সিরামিক রোড পেট্রোল পাম্পের পাশে, মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট, পুলিশ স্টাফ কলেজ, নাবিস্কো ফ্যাক্টরির সামনে, বিজি প্রেস উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, মহাখালী ডিএনসিসি অঞ্চল-৩ অফিসের সামনে, মহাখালী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে, নেভাল হেডকোয়ার্টার সংলগ্ন এয়ারপোর্ট রোড, এয়ারপোর্ট রোড আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে।
এছাড়া গুলশান-১ মসজিদের সামনে, গুলশান-২ আজাদ মসজিদের সামনে, গুলশান-১ শুটিং ক্লাবের সামনে, কোকাকোলা মোড়, প্রগতি সরণি শাহজাদপুর, মেরুল বাড্ডা বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে, প্রগতি সরণি সড়কের রামপুরা ব্রিজের সামনে, টেকনিক্যাল ক্রসিং, মাজার রোড, রজনীগন্ধা সুপার মার্কেট কচুক্ষেত, ৬০ ফুট মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মিরপুর রোড শ্যামলী ইন্টার সেকশন, সাতমসজিদ রোড গ্রাফিক্স কলেজের সামনে, রিং রোড আদাবর থানার পাশে, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর রিং রোড শিয়া মসজিদ ক্রসিং, মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের পাশে ও বসিলা রোড বেড়িবাঁধ বাঁশবাড়ি সড়কে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকার সড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলা বাড়াবে, শৃঙ্খলার সঙ্গে সড়ক ব্যবহারের মাধ্যমে সড়ক পারাপার, গণপরিবহন ব্যবহার, স্বাচ্ছন্দে ফুটপাত ব্যবহার, হাঁটার ফলে শারীরিক সুস্থতা এবং জীবনমান উন্নয়ন হবে। প্রকল্প এলাকায় অনাকাঙ্খিত সড়ক দুর্ঘটনা কমবে। ফলে এলাকার জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারীর যাতায়াত সুবিধাদি ও শারীরিক সুস্থতাসহ নিরাপত্তা বাড়াবে বলে দাবি করেছে ডিএনসিসি।