তালা উপজেলার কৃতি সন্তান একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারজয়ী কবি, রাজনীতিক সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রোজী মারা গেছেন। ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তার মেয়ে সুমী সিকানদার এ তথ্য জানিয়েছেন। কাজী রোজী সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত কাজী শহীদুল ইসলামের কন্যা।
সুমী সিকানদার জানান, শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে কাজী রোজীকে ভর্তি করা হয়। কোভিড পজিটিভ হওয়ায় তাকে আইসোলেশন ইউনিটের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। তবে সে সময় মায়ের মস্তিষ্ক কাজ করছিল না, কিডনিতে ইনফেকশন; মাল্টি অর্গান প্রবলেম ছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টা ৩০ মিনিটে মারা যান। কাজী রোজীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের পয়লা জানুয়ারি, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে কবি কাজী রোজীর জন্ম । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে সাহিত্যে স্নাতক ও এমএ পাস করেন। ২০০৭ সালে তথ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে অবসর নেন। ১৯৬০-এর দশকে কবিতা লেখা শুরু করেন কাজী রোজী।
তিনি জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে প্রথমাবস্থায় নির্বাচিত অপর ৪৭ জন সদস্যের সঙ্গে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ‘সংসদ সদস্য’ পদে নির্বাচিত হন। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০২১ সালের বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক পান কাজী রোজী।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো— পথঘাট মানুষের নাম (কাব্যগ্রন্থ), নষ্ট জোয়ার (কাব্যগ্রন্থ), আমার পিরানের কোনো মাপ নেই (কাব্যগ্রন্থ), লড়াই (কাব্যগ্রন্থ), শহীদ কবি মেহেরুন নেসা (জীবনী গ্রন্থ), রবীন্দ্রনাথ: রসিকতার কবিতা (গবেষণা গ্রন্থ)।