সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের তালা উপজেলার শুভাষিনী কলেজের পাশে ট্রাক-পিকআপের সংঘর্ষে দু’জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২২জন। শনিবার (১৭ এপ্রিল) ভোর ৩টার দিকে এঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর গ্রামের আবু বক্কর কারিকরে ছেলে মুন্না কারিকর (৩৫) এবং একই গ্রামের বাহার আলী গাজীর ঘরজামাই ও আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৫০)।
আহতরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর গ্রামের শেখ আহাদ আলীর ছেলে মহাতাবউদ্দিন (৫০), একই গ্রামের মফেল মোল্লা (৬০), একই গ্রামের নওশের আলীর ছেলে বাবর আলী (৫২), একই উপজেলার তারালী গ্রামের বিষ্ণুপদ মন্ডলের ছেলে কুষ্ণপদ মন্ডল (২৭), খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার শ্রীকন্ঠপুর গ্রামের মোঃ আব্দুস সালাম সানা (৫০), তার মেয়ে ফাতেমা (১৭), সাতক্ষীরা সদরের বাউখোলা গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে আসাদুল ইসলাম, কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর গ্রামের আনছার আলীর ছেলে শাহজামাল (২৫), একই গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে মামুন হোসেন (১৭), আব্দুল গফুরের ছেলে ইউনুছ আলী (৩৫), সুমন হোসেন (২১), আব্বাস আলী বিশ্বাস (৬০) ও মোঃ আশরাফুল ইসলাম (১৮)। এদের সকলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শনিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কালীগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের কৃষ্ণপদ মন্ডলের শ্বশুর বিশ্বনাথ মন্ডল জানান, গত ৩ এপ্রিল স্থানীয় এক শ্রমিক সরদারের মাধ্যমে জামাতা কৃষ্ণপদ মন্ডলসহ এলাকার ২৮ জন মাদারীপুরে এক ঠিকাদারের রাস্তার কাজ করতে যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজ বন্ধ থাকায় তারা ২৪ জন একসাথে একটি পিকআপে বাড়ি ফিরছিল। শনিবার ভোর তিনটার দিকে তাদের বহনকারি পিকআপটি তালা উপজেলার সুভাষিনি কলেজ ছাড়িয়ে আসার পরপরই বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতিগামি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা মারে। এতে পিকআপটি চারটি পাল্টি খেয়ে বিলের মধ্যে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় শফিকুল ও মুন্না।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১৩ জনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও নয়জনকে স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সদর হাসপতালে চিকিৎসাধীন মহাতাবউদ্দিন, মফেল, বাবর আলী, অঅব্দুস সালাম সানা ও কৃষ্ণপদ মন্ডলে শনিবার সকালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ রওশান দায়েমী জানান, পাঁচজনের প্রচন্ড বমি হওয়ায় তাদেরকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকী আটজনের স্বজনরা করোনার ভয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই কৌশলে বাড়িসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে স্থানান্তর করেছে।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মেহেদী রাসেল জানান, কালিগঞ্জ উপজেলার শতাধিক শ্রমিক শরীয়তপুরের বিভিন্ন ইটভাটায় কাজ করতেন। রাতে তাদের অনেকেই পিকআপভ্যানে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তালা থানার শুভাষিনী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন। এছাড়া আহত হন কমপক্ষে ২০/২২ জন ভাটা শ্রমিক। নিহত দু’জনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।