কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে স্ত্রী–সন্তান ও এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার পর তাঁদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। তিনজনকেই দুটি করে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রোববার (১৩ জুন) বিকেলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করার পর চিকিৎসক এ কথা জানান।
বিকেল সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত লাশ তিনটির ময়নাতদন্ত করেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার। ময়নাতদন্ত শেষে তাপস কুমার সরকার বলেন, তিনজনকে দুটি করে ছয়টি গুলি করা হয়েছে। প্রত্যেকের মাথায় কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রথমে শাকিল খানের ময়নাতদন্ত করা হয়। তাঁর মাথার বাম পাশে গুলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ডান পায়ের ঊরুতে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এরপর আসমা খাতুনের ময়নাতদন্ত করা হয়। আসমার মাথা ও গলায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
সবশেষে শিশু রবিনের (৬) ময়নাতদন্ত করা হয়। রবিনের মাথায় ও পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে কারও গুলিই পাওয়া যায়নি। গুলিগুলো শরীর ভেদ করে বাইরে চলে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রবিনকে দৌড়ে পালানোর সময় পেছন থেকে পিঠে গুলি করা হয়। এরপর পড়ে গেলে তার মাথায় গুলি করা হয়।
আজ বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে শহরের পিটিআই সড়কের মুখে তিনতলা ভবনের সামনে আসমা, শাকিল ও রবিনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সৌমেন রায় নামের এক এএসআইকে পিস্তলসহ আটক করেছে। তিনি ফুলতলা থানায় কর্মরত। তাঁর বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আসপা গ্রামে।
এদিকে কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় আটক এএসআই সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় খুলনা রেঞ্জ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ কুষ্টিয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
বিকেলে খুলনা জেলার পুলিশ সুপার মাহবুব রহমান বলেন, ঘটনা জানার পর সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর তদন্ত শেষে তাঁর বিরুদ্ধে সর্বশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সূত্র জানায়, সৌমেন রায় ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে উন্নীত হন। পরে ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগ দেন। সেখান থেকে জেলার অন্যান্য থানায়ও কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ মিরপুর থানার হালসা ক্যাম্পে ছিলেন। এরপর বাগেরহাট হয়ে খুলনা ফুলতলা থানায় যোগ দেন।
নিহত শাকিল খানের বাবা মেজবার রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন।