অনলাইন ডেস্কঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিনে তাকে স্মরণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের অন্যদের হত্যাকাণ্ডের কথা বলতে গিয়ে খানিক কেঁপেও উঠলো তার গলা। একরাতে পরিবারের প্রায় সব সদস্যকে হারানো প্রধানমন্ত্রী তাই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খুঁজে ফেরেন তার স্বজনদের। সে কথা বলতে গিয়েই তিনি বললেন, ‘পঁচাত্তরে তিন ভাইকে হারিয়ে আমি লাখো ভাই পেয়েছি।’
রোববার (১৭ মার্চ) সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নই ছিল শিশুরা মানুষের মতো মানুষ হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। আজকের শিশু আগামি দিনে সুন্দর জীবন পাবে, সেটাই আমাদের অঙ্গীকার।’
উপস্থিথ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করে শেখ হাসিনা বলেন, টুঙ্গীপাড়ার এই মাটিতেই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এখানেই তিনি শেষ শয্যায় শায়িত হয়েছেন। এ মাসেই তার জন্ম আবার এ মাসেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে নেতার জন্ম না হলে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের সুযোগ পেতাম না সেই নেতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে। তিনি দেশকে ভালোবেসেছিলেন। ছোটবেলো থেবেই দারিদ্রপীড়িত মানুষকে দেখে তার হৃদয় কাঁদতো। সেই মানুষের কথা বলতে গিয়েই তিনি বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। কিন্তু কোনো অত্যাচার নির্যাতন বা ফাঁসির দড়িও তাকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন।’
কিন্তু দেশকে নিয়ে যেসব স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন তার সবটুকু শেষ করে দিয়ে যেতে পারেননি। ১৯৭৫ সালে ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় তার জীবন। ১৫ আগস্টের শহীদদের কথা বলতে গিয়ে এসময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা দুবোন পরিবার হারিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছিল স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ৭৫ এর পরে বাংলাদেশের শিশু কিশোরেরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারেনি। ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। কিন্তু সত্যকে কেউ ঢেকে রাখতে পারে না। সত্যের জয় হয়েছে। আজ বাংলাদেশের মানুষ যেমন ইতিহাস জানতে পারছে তেমনি যে ভাষণ ২১ বছর এদেশের মাটিতে বাজানো যায়নি সেই ভাষণ আজ বিশ্ব স্বীকৃত, বিশ্ব মর্যাদা পেয়েছে। যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জল করেছে।’
এসময় সরকার শিশুদের জন্য যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে দেশের মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে, শিশুদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে নিজের বক্তব্য শেষ করেন শেখ হাসিনা।